Description
সহীহ মুসলিম বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার ৪র্থ খন্ড
১৪. অধ্যায়ঃ
ইসতিহাযাহ {৮৯} বা রক্তপ্রদর রোগগ্রস্ত মহিলার গোসল ও তার নামায প্রসঙ্গ
{৮৯} ইসতিহাযাহ্ বলা হয় ঐ রক্তকে যা হায়িয ও নিফাসের নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত মহিলাদের লজ্জাস্থান দিয়ে রক্ত বের হয় । এ রক্ত একটি রগ থেকে বের হয়ে থাকে যাকে আদিল বলা হয় । আর হায়িযের রক্ত যরায়ুর ভিতর থেকে বের হয় । ইসতিহাযার রক্ত সাধারনত লাল কিংবা হলদে অথবা মেটে রং হয় এবং হায়িযের রক্ত স্বভাবত কালচে রং হয় । সুতরাং রক্তের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখলে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝা যায় ।
ইসতিহাযাহ রোগাক্রান্ত মহিলা সুস্থ মহিলার মত নামায, সওম, ইতিকাফ, কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত সহ যাবতীয় ইবাদত বন্দেগী করিতে পারবে । তবে প্রত্যেক ওয়াক্তের সলাতে প্রারম্ভে ওযূ করে নিবে । আর যখন নামায আদায় করার নিয়্যাত করিবে তখন লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে এবং উক্তস্থানে এক টুকরো কাপড়, তুলা লাগিয়ে রাখবে । [নাবাবী]
৬৪০
আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
ফাতিমাহ্ বিনতু আবু হুরায়শ নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহর রসুল! আমি একযন ইসতিহাযাহ্ বা রক্তপ্রদর রোগগ্রস্ত নারী। কখনো এ রোগ থেকে মুক্ত হই না। তাই আমি এ নামায আদায় করা কি ছেড়ে দিব? রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] তাকে বললেনঃ না , তুমি নামায আদায় ছাড়বেনা। কেননা, এ হায়িয না বরং একটি শিরা নিঃসৃত রক্ত। তাই যখন হায়িয দেখা দিবে তখন শুধু নামায আদায় করিবেনা। আর যখন হায়িয ভাল হয়ে যাবে তখন রক্ত ধুয়ে ফেলে গোসল করে পবিত্র হয়ে নামায আদায় করিবে। [ইসলামিক ফা:- ৬৪৪, ইসলামিক সে.- ৬৫৯]
{৮৯} ইসতিহাযাহ্ বলা হয় ঐ রক্তকে যা হায়িয ও নিফাসের নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত মহিলাদের লজ্জাস্থান দিয়ে রক্ত বের হয় । এ রক্ত একটি রগ থেকে বের হয়ে থাকে যাকে আদিল বলা হয় । আর হায়িযের রক্ত যরায়ুর ভিতর থেকে বের হয় । ইসতিহাযার রক্ত সাধারনত লাল কিংবা হলদে অথবা মেটে রং হয় এবং হায়িযের রক্ত স্বভাবত কালচে রং হয় । সুতরাং রক্তের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখলে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝা যায় ।
ইসতিহাযাহ রোগাক্রান্ত মহিলা সুস্থ মহিলার মত নামায, সওম, ইতিকাফ, কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত সহ যাবতীয় ইবাদত বন্দেগী করিতে পারবে । তবে প্রত্যেক ওয়াক্তের সলাতে প্রারম্ভে ওযূ করে নিবে । আর যখন নামায আদায় করার নিয়্যাত করিবে তখন লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে এবং উক্তস্থানে এক টুকরো কাপড়, তুলা লাগিয়ে রাখবে । [নাবাবী]
৬৪১
জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
ফাতিমাহ্ বিনতু আবু হুবায়শ ইবন আব্দুল মুত্তালিব ইবন আসাদ যিনি আমাদের বংশের একযন মহিলা ছিলেন- রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে এলেন। আর হাম্মাদ ইবন যায়দ-এর হাদীসে একতা অক্ষর অতিরিক্ত ছিল, আমরা তা উল্লেখ করিনি।
[ইসলামিক ফা:- ৬৪৫, ইসলামিক সে.- ৬৬০]
৬৪২
আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ্ বিনতু জাহ্শ রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে মাসআলা জানতে চেয়ে বলিল, আমার ইসতিহাযাহ্ হয়েছে, রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, ওটা হল একতা রগের [ধমনী] রক্ত। তাই তুমি গোসল করে ফেলবে তারপর নামায আদায় করিবে। এরপর সে প্রতি নামাজের সময়ই গোসল করত। রাবী লায়স ইবন সাদ বলেন, ইবন শিহাব এ কথা উল্লেখ করেননি যে, রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] উম্মু হাবীবাহ্কে প্রত্যেক নামাজের সময়ই গোসলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বরং এটা সে নিজের থেকেই করত। ইবন রুম্হ তার বর্ণনায় জাহ্শের কন্যার কথা বলেছেন, উম্মু হাবীবার নাম উল্লেখ করেননি। [ইসলামিক ফা:- ৬৪৬, ইসলামিক সে.- ৬৬১]
৬৪৩
নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর স্ত্রী আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর শ্যালিকা এবং আব্দুর রহমান ইবন আওফ-এর স্ত্রী হাবীবাহ্ বিনতু জাহা্শ সাত বছর যাবৎ ইসতিহাযার রোগী ছিলেন। তিনি রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে এ ব্যাপারে মাসআলা জানতে চাইলেন। রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, এটা হায়িয নয়; বরং ধমনীর [রগের] রক্ত। তাই তুমি গোসল করে ফেল এবং নামায আদায় কর।
আয়েশাহহ্ [রাঃআঃ] বলেন, এরপর তিনি তার বোন যায়নাব বিনতু জাহ্শ-এর ঘরে একটি পাত্রের মধ্যে বসে গোসল করিতেন। এমনকি পানি রক্তে লাল হয়ে যেত।
ইবন শিহাব বলেন, আমি এই হাদীসটি আবু বাক্র ইবন আব্দুর রহমান ইবনল হারিস ইবন হিশাম-এর কাছের বর্ণনা করলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহ তায়ালা হিন্দের ওপর রহমাত করুন। সে যদি এ ফাতাওয়ার [মাসআলাহ্] শুনতে পেত! আল্লাহর কসম! সে শুধু কাঁদত। কারন সে নামায আদায় করতনা [এ মাসআলা তার জানা ছিলনা। ফলে নামায আদায় করিতে না পারার কারণে কাঁদত]। [ইসলামিক ফা:- ৬৪৭, ইসলামিক সে.- ৬৬২]
৬৪৪
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ্ বিনতু জাহ্শ রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে এলো। আর সাত বৎসর ধরে তার ইসতিহাযাহ্ চলছিল। এরপর রাবী আবু ইমরান আম্র ইবনল হারিসের অনুরূপ “এমনকি পানি রক্তে লাল হয়ে যেত” পর্যন্ত বর্ণনা করেন এর পরবর্তী অংশ তিনি উল্লেখ করেননি। [ইসলামিক ফা:- ৬৪৮, ইসলামিক সে.- ৬৬৩]
৬৪৫
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
জাহ্শ-এর কন্যার সাত বৎসর যাবত ইসতিহাযাহ্ ছিল। এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। [ইসলামিক ফা:- ৬৪৯, ইসলামিক সে.- ৬৬৪]
৬৪৬
আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ্ রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-কে রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। এরপর আয়িশা [রাঃআঃ] বলেন, আমি তার পাত্র দেখেছি রক্তে পরিপূর্ণ। এরপর রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] তাকে বলিলেন, তোমার হায়িয যে কয়দিন হয়, সে কয়দিন পরিমাণ তুমি অপেক্ষা কর। তারপর গোসল করে ফেল এবং নামায আদায় কর। [ইসলামিক ফা:- ৬৫০, ইসলামিক সে.- ৬৬৫]
৬৪৭
নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] –এর স্ত্রী আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেছেন, আব্দুর রহমান ইবন আওফ-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ্ বিনতু জাহ্শ রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে এসে তার রক্ত প্রদরের অসুবিধার কথা বলিল। তিনি তাকে বললেনঃ তুমি তোমার মাসিক ঋতুর মেয়াদ পরিমাণ অপেক্ষা কর [অর্থাৎ] এ সময়ে নামায আদায় করিবেনা। এ সময় পার হলে তুমি গোসল করিবে এবং নামায আদায় করিবে। তাই তিনি প্রতেক নামাজের সময়েই গোসল করিতেন।৯০ [ইসলামিক ফা:- ৬৫১, ইসলামিক সে.- ৬৬৬]
{৯০} হায়য অবস্থায় নামায মাফ এবং সওমের কাযা করিতে হয় । এটা পরম করুণাময় আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ তা না হলে নামাজের কাযা করিতে মহিলাদের বিশেষ কষ্ট হতো । নামায দৈনিক পাঁচবার পড়তে হয় বিধায় বছরের বহু নামাজের কাযা করিতে হতো । আর সওম বছরে একবার মাত্র । সুতরাং ৫/৭ দিন সওম কাযা করা কোন কঠিন কিছু নয় । [নাবাবী]
১৫. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী মহিলার উপর সওম কায়া করা যরুরী, নামায নয়
৬৪৮
মুআযাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
যনৈক মহিলা আয়েশাহ [রাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করিল, আমাদের কেউ কি তার হায়িযের দিন গুলোর নামায কাযা করিবে? আয়িশা [রাঃআঃ] বলিলেন, তুমি কি হারুরিয়্যাহ্ {৯১} [খারিজীয়া]? রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর যুগে আমাদের কারো হায়িয হলে পড়ে তাকে [নামায] কাযা করার নির্দেশ দেয়া হতো না। [ইসলামিক ফা:- ৬৫২, ইসলামিক সে.- ৬৬৭]
{৯১} [হরুরী] হারুরা কুফা নগরের নিকটবর্তী একটি গ্রামের নাম । প্রথমে খারিজীরা এ গ্রামে এসে একত্রিত ছিল এ যন্য তাদেরকে হারুরী বলা হয়েছে । এ খারেজীরা সহীহ হাদীস এবং মুসলিমদের ঐক্যমতের বিরোধিতা করে বলে হায়িযা অর্থাৎ ঋতুবতী মহিলাদের নামায কাযা করিতে হইবে । [নাবাবী]
৬৪৯
মুআযাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি আয়েশাহ [রাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করিলেন, ঋতুবতী মহিলা কি নামায কাযা করিবে? আয়েশাহহ [রাঃআঃ] বলিলেন, তুমি কি হারুরিয়্যাহ্? রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর পত্নীগনের হায়িয হতো, তিনি কি তাদেরকে [নামায] কাযা করার হুকুম দিয়েছেন? মুহাম্মাদ ইবন জাফার বলেন [আরবি] নামায কাযা করা। [ইসলামিক ফা:- ৬৫৩, ইসলামিক সে.- ৬৬৮]
৬৫০
মুআযাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করলাম, ঋতুবতী মহিলা সওম কাযা করিবে এবং নামায কাযা করিবেনা এটা কেমন কথা? তুমি কি হারুরিয়্যাহ্? আমি বললাম, আমি হারুরিয়্যাহ্ নয়; বরং আমি [জানার যন্যই কেবল] জিজ্ঞেস করছি। তিনি {আয়িশা [রাঃআঃ]} বলিলেন, আমাদের এরূপ হত। তখন আমাদেরকে কেবল সওম কাযা করার নির্দেশ দেয়া হত, নামায কাযা করার নির্দেশ দেয়া হত না। [ইসলামিক ফা:- ৬৫৪, ইসলামিক সে.- ৬৬৯]
Reviews
There are no reviews yet.