Description
বাংলাদেশে উশর বা ফসলের যাকাত
বাংলাদেশে উশর বা ফসলের যাকাত
মিশকাত শরিফ ১৭৭২
আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস {রাজি.} হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন,রাসূ লুল্লাহ {সাল্লাল্লাহু আঃ} মুআয ইবন জাবাল {রাজি.}-কে ইয়ামানে পাঠাবার সময় বললেন,মুআয! তুমি আহলে কিতাবদের {ইয়াহূদী ও খৃস্টান} নিকট যাচ্ছো। প্রথমতঃ তাদেরকে এ লক্ষ্যে দ্বীনের প্রতি আহবান করিবে,এক আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই,আর মুহাম্মাদ {সাল্লাল্লাহু আঃ} আল্লাহর রাসুল। যদি তারা এটা মেনে নেয় তাহলে তাদের সামনে এই ঘোষণা দেবে যে,নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর দিনরাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফার্য করিয়াছেন। তারা এটা মেনে নিলে তাদেরকে জানাবে,নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর যাকাত ফার্য করিয়াছেন। তাদের ধনীদের কাছ থেকে তা গ্রহণ করে তাদের গরীবদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। যদি তারা এ হুকুমের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তাহলে তুমি {তাদের} ভাল ভাল মাল গ্রহণ থেকে বিরত থাকিবে,মাযলূমের ফরিয়াদ হইতে বাঁচার চেষ্টা করিবে। কেননা মাযলূমের ফরিয়াদ আর আল্লাহ তাআলার মধ্যে কোন আড়াল থাকে না। {বোখারী,মুসলিম} (১)
(১) সহীহ : বোখারী ২১৪৯৬, মুসলিম ১৯, আবু দাউদ ১৫৮৪, আত তিরমিজি ৬২৫, নাসায়ী ২৫২২, ইবন মাজাহ ১৭৮৩, সহীহ ইবন খুযায়মাহ্ ২২৭৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭২৭৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৫৭, ইরওয়া ৭৮২, সহীহ আল জামি আস্ সগীর ২২৯৮।
এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
মিশকাত শরিফ ১৭৭৩
আবু হুরাইরাহ {রাজি.} হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন,রাসূ লুল্লাহ {সাল্লাল্লাহু আঃ} বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সোনা রূপার {নিসাব পরিমাণ} মালিক হবে অথচ তার হাক্ব {যাকাত} আদায় করিবে না তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন {তা দিয়ে} আগুনের পাত বানানো হবে। এগুলোকে জাহান্নামের আগুনে এমন ভাবে গরম করা হবে যেন তা আগুনেরই পাত। সে পাত দিয়ে তার পাঁজর,কপাল ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। তারপর এ পাত পৃথক করা হবে। আবার আগুনে উত্তপ্ত করে তার শরীরে লাগানো হবে। আর লাগানোর সময়ের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। {এ অবস্থা চলবে} বান্দার {জান্নাত জাহান্নামের} ফায়সালা হওয়া পর্যন্ত। তারপর তাকে নেয়া হবে জান্নাত অথবা জাহান্নামে। সহাবীগণ আরয করলেন,হে আল্লাহর রাসুল! উটের বিষয়টি {যাকাত না দেবার পরিণাম} কি? রাসূ লুল্লাহ {সাল্লাল্লাহু আঃ} বললেনঃ উটের মালিক যদি এর হাক্ব {যাকাত} আদায় না করে- যেদিন উটকে পানি খাওয়ানো হবে সেদিন তাকে দুহানোও তার একটা হাক্ব – ক্বিয়ামাতের দিন ওই ব্যক্তিকে সমতল ভূমিতে উটের সামনে মুখের উপর উপুড় করে ফেলা হবে। তার সবগুলো উট গুণে গুণে {আনা হবে} মোটা তাজা একটি বাচ্চাও কম হবে না। এসব উট মালিককে পায়ের নিচে ফেলে পিষতে থাকিবে, দাঁত দিয়ে কামড়াবে। এ উটগুলো চলে গেলে,আবার আর একদল উট আসবে। যে দিন এমন ঘটবে,সে দিনের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এমনকি বান্দার হিসাব-নিকাশ শেষ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা জাহান্নামের দিকে অগ্রসর হবে। সহাবীগণ আরয করলেন,হে আল্লাহর রাসুল! গরু-ছাগলের যাকাত আদায় না করলে {মালিকদের} কি অবস্থা হবে? তিনি বললেন,যে ব্যক্তি গরু-ছাগলের মালিক হয়ে এর হাক্ব {যাকাত} আদায় করে না ক্বিয়ামাতের দিন তাকে সমতল ভূমিতে উপুড় করে ফেলা হবে। তার সব গরু ও ছাগলকে {ওখানে আনা হবে} একটুও কম-বেশি হবে না। গরু-ছাগলের শিং বাঁকা কিংবা ভঙ্গ হবে না। শিং ছাড়াও কোনটা হবে না। এসব গরু ছাগল শিং দিয়ে মালিককে গুতো মারতে থাকিবে,খুর দিয়ে পিষবে। এভাবে একদলের পর আর একদল আসবে। এ সময়ের মেয়াদও হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এর মধ্যে বান্দার হিসাব-নিকাশ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা জাহান্নামে তার গন্তব্য দেখিতে পাবে।
সহাবীগণ আরয করলেন,হে আল্লাহর রাসুল! ঘোড়ার অবস্থা কি হবে? রাসূ লুল্লাহ {সাল্লাল্লাহু আঃ} বললেনঃ ঘোড়া তিন প্রকারের। প্রথমতঃ যা মানুষের জন্য গুনাহের কারণ হয়। দ্বিতীয়তঃ যা মানুষের জন্য পর্দা। আর তৃতীয়তঃ মানুষের জন্য সাওয়াবের কারণ।
গুনাহের কারণ ঘোড়া হলো ঐ মালিকের,যেগুলোকে সে মুসলিমদের ওপর গৌরব,অহংকার ও শৌর্যবীর্য দেখাবার জন্য পালন করে। আর যেগুলো মালিক-এর জন্য পর্দা হবে,সেগুলো ঐ ঘোড়া,যে সবের ঘোড়ার মালিক আল্লাহর পথে লালন পালন করে।
বাংলাদেশে উশর বা ফসলের যাকাত
Reviews
There are no reviews yet.