Description
সহীহ মুসলিম বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার ৫ম খন্ড
১১. অধ্যায়ঃ
মাথা এবং কতিপয় অঙ্গে [গোসলের সময়] তিনবার পানি ঢেলে দেয়া মুস্তাহাব
৬২৭
জুবায়র ইবন মুতইম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর সম্মুখে লোকেরা গোসল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু করিল। কেউ কেউ বলিল, আমি তো এ পরিমাণ পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে থাকি। তখন রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, আমি তো আমার মাথায় তিন কোষ পানি ঢেলে থাকি। {৮৭} [ইসলামিক ফা:- ৬৩১, ইসলামিক সে.- ৬৪৬]
{৮৭} ইমাম নাবাবী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, পবিত্রতার গোসলের সময় মাথায় তিনবার পানি ঢেলে দেয়া মুস্তাহাব। যেমন ওযূর অঙ্গসমূহ তিনবার করে ধৌত করা মুস্তাহাব।]
৬২৮
জুবায়র ইবন মুতইম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর কাছে একবার অপবিত্রতা থেকে গোসলের আলোচনা করা হলে তিনি বলিলেন, আমি তো আমার মাথায় তিন বার পানি ঢেলে দেই। [ইসলামিক ফা:- ৬৩২, ইসলামিক সে.- ৬৪৭]
৬২৯
জাবির ইবন আবদুল্লা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
[তিনি বলেছেন] সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দল এসে রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে জিজ্ঞেস করলঃ আমাদের এলাকাটি অত্যন্ত শীতপ্রধান, সেখানে আমরা [অপবিত্রতার] গোসল কীভাবে করব? তিনি বলিলেন, আমি তো আমার মাথায় তিন বার পানি ঢেলে থাকি।
ইবন সালিম হুশায়ম ও আবু বিশর্ এর মাধ্যমে তাহার বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দল এসে হে আল্লাহর রাসুল বলে সম্বোধন করেছিল। [ইসলামিক ফা:- ৬৩৩, ইসলামিক সে.- ৬৪৮]
৬৩০
জাবির ইবন আবদুল্লা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
[তিনি বলেছেন] রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] অপবিত্রতার গোসল করার সময় মাথায় তিন আঁযলা পানি ঢালতেন। হাসান ইবন মুহাম্মাদ তাঁকে [জাবিরকে] বলিলেন, আমার মাথায় তো চুল অনেক [কাজেই এটুকু পানি তো আমার যন্য যথেষ্ট নয়] যবাবে জাবির বলিলেন, ভাতিজা রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর মাথায় চুল তোমার চেয়ে অনেক বেশি এবং উত্তম ও পরিচ্ছন্ন ছিল। [ইসলামিক ফা:- ৬৩৪, ইসলামিক সে.- ৬৪৯]
১২. অধ্যায়ঃ
গোসলকারিনীর [অপবিত্রতার] মাথার বেনীর হুকুম
৬৩১
উম্মু সালামাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি তো মাথায় চুলের বেনী গেঁথে থাকি। সুতরাং অপবিত্রতার গোসলের সময় কি আমি তা খুলব? তিনি বলিলেন, না। বরং তোমার যন্য এটাই যথেষ্ট যে, তুমি মাথার ওপর তিন আঁযলা পানি ঢেলে দিবে। অতঃপর সারা শরীরে পানি ঢেলে দিয়ে পবিত্র হয়ে যাবে। {৮৮} [ইসলামিক ফা:- ৬৩৫, ইসলামিক সে.- ৬৫০]
{৮৮} উম্মু সালামাহ্ ও আয়েশাহ[রাঃআঃ] বর্ণিত হাদীস দ্বারা বুঝা গেল যে, মহিলাদের পবিত্রতার গোসলের সময় মাথার চুলের বেনী খোলা যরুরি নয়
৬৩২
আম্র আন্ নাকিদ ও আব্দ ইবন হুমায়দ [রাহিমাহুল্লাহ] এর সূত্রে হইতে বর্ণীত আছেঃ
এ সানাদে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত আছে। আব্দুর রায্যাকের হাদীসে রয়েছে যে, “আমি কি তা হায়িয ও অপবিত্রতা থেকে গোসলের যন্যে খুলবো? তিনি বলিলেন, না”।এরপর ইবন উয়াইনার [উপরোক্ত] হাদীসের অনুরূপ। [ইসলামিক ফা:- ৬৩৬, ইসলামিক সে.- ৬৫১]
৬৩৩
আহমাদ ইবন সাইদ আদ্ দারিমী [রাহিমাহুল্লাহ] এর সূত্রে আইয়ূব ইবন মূসা [রাঃআঃ] হইতে এ সূত্রে হইতে বর্ণীত আছেঃ
সেখানে উল্লেখ আছে যে, “আমি কি তা খুলে অপবিত্রতা থেকে গোসল করব?” সেখানে তিনি হায়িযের কথা উল্লেখ করেননি। [ইসলামিক ফা:- ৬৩৭, ইসলামিক সে.- ৬৫২]
৬৩৪
উবায়দ ইবন উমায়র [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেছেন, আয়েশাহ[রাঃআঃ] এর নিকটে খবর পৌঁছিল যে, আবদুল্লা ইবন আম্র স্ত্রীলোকদেরকে গোসলের সময় তাদের মাথার চুল [বেনী] খোলার আদেশ দিয়ে থাকেন। এ কথা জানার পর আয়েশাহ[রাঃআঃ] বলেন, আশ্চর্য লাগে ইবন আম্র [রাঃআঃ] এর মত লোক মেয়েদেরকে গোসলের সময় মাথার চুল খোলার আদেশ করেন। তাহলে তো তিনি তাদেরকে মাথার চুল মুড়ে ফেলার আদেশ দিতে পারেন। অথচ আমি এবং রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এক সাথে একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে অপবিত্রতার গোসল করেছি। এ সময় আমি আমার মাথায় তিন কোষ [দুই হাতের তালুর] অধিক পানি ঢালিনি। [ইসলামিক ফা:- ৬৩৮, ইসলামিক সে.- ৬৫৩]
১৩. অধ্যায়ঃ
হায়িয থেকে গোসলকারিনীর যন্যে রক্তের স্থানে [লজ্জাস্থানে] সুগন্ধযুক্ত কাপড়ের টুকরা বা তুলা ব্যবহার করা মুস্তাহাব
৬৩৫
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
এক মহিলা রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে জিজ্ঞেস করিল যে, কিভাবে সে তাহার হায়িয থেকে গোসল করিবে? হাদীসের রাবী বলেন, আয়েশাহ[রাঃআঃ] উল্লেখ করেন যে, রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] ভদ্রমহিলাকে সে কিভাবে গোসল করিবে, তা শিখিয়ে দিলেন তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা ব্যবহার করিবে এবং তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। সে বলিল, এ সুগন্ধযুক্ত কাপড় দ্বারা আমি কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করব? তিনি বলিলেন, তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। তিনি বলিলেন, সুবহানাল্লাহ্! [এত সোজা কথাও বুঝ না]। এরপর তিনি [মুখ] সরিয়ে নিলেন। [রাবী বলেন] সুফ্ইয়ান ইবন উয়াইনাহ্ নিয মুখের উপর হাত দিয়ে আমাদেরকে ইশারা করে দেখালেন। আয়েশাহ[রাঃআঃ] বলেন, আমি তাঁকে আমার দিকে টেনে আনলাম। আর রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কি বুঝাতে চাচ্ছেন তা আমি বুঝে ফেললাম। অতঃপর আমি মহিলাটিকে বললাম, তুমি তা [সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা] রক্তের স্থানে [লজ্জাস্থানে] বুলিয়ে নিবে। ইবন ওমর তাহার বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, তিনি বলেনঃ আমি বললাম, রক্তের স্থানে সুগন্ধযুক্ত কাপড়টি বুলিয়ে দিন। [ইসলামিক ফা:- ৬৩৯, ইসলামিক সে.- ৬৫৪]
৬৩৬
আয়েশাহ[রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
এক মহিলা রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে জিজ্ঞেস করিল যে, আমি তুহ্র এর [হায়িয থেকে পবিত্রতার] সময় কিভাবে গোসল করব? তিনি বলিলেন, এক টুকরো সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা নিবে তারপর তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। এরপর সুফ্ইয়ানের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। [ইসলামিক ফা:- ৬৪০, ইসলামিক সে.- ৬৫৫]
৬৩৭
আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
একদা আসমা [রাঃআঃ] রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] – কাছে হায়িযের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। তিনি বলিলেন, তোমাদের কেউ পানি এবং বরইয়ের পাতা নিয়ে সুন্দর ভাবে পবিত্রতা অর্জন করিবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে দিয়ে ভালভাবে নাড়াচড়া করিবে যাতে পানি সমস্ত চুলের গোড়া পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তারপর তার উপর পানি ঢেলে দিবে। তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড় নিয়ে তার দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। আসমা বলিল, তা দিয়ে সে কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করিবে। অতঃপর আয়িশা [রাঃআঃ] তাকে যেন চুপি চুপি বলে দিলেন, রক্ত বের হবার জায়গায় তা বুলিয়ে দিবে। সে অপবিত্রতার গোসল সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করিল। তিনি বলিলেন, পানি নিয়ে তার দ্বারা সুন্দরভাবে পবিত্রতা অর্জন করিবে। তার মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে ভাল করে নাড়াচড়া করিবে যাতে চুলের গোঁড়ায় পানি পৌঁছে যায়। তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিবে। আয়িশা [রাঃআঃ] বলিলেন, আনসারদের মহিলারা কত ভাল ! লজ্জা তাদেরকে দীন-এর জ্ঞান থেকে ফিরিয়ে রাখে না। [ইসলামিক ফা:- ৬৪১, ইসলামিক সে.- ৬৫৬]
৬৩৮
শুবাহ্ হইতে বর্ণীত আছেঃ
অবিকল বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! তা দ্বারা পবিত্রতা লাভ করিবে। অতঃপর তিনি আড়াল করিলেন। [ইসলামিক ফা:- ৬৪২, ইসলামিক সে.- ৬৫৭]
৬৩৯
আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আসমা বিনতু শাকাল রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে এসে বলিল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাদের কেউ যখন হায়িয থেকে পবিত্র হইবে তখন সে কিভাবে গোসল করিবে? এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে হাদীসটির মধ্যে অপবিত্রতার গোসলের কথা উল্লেখ করেননি। [ইসলামিক ফা:- ৬৪৩, ইসলামিক সে.- ৬৫৮]
Reviews
There are no reviews yet.