Description
সহীহ মুসলিম বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার ৭ম খন্ড
৭. অধ্যায়ঃ
মহিলার মানী [বীর্য] বের হলে তার উপর গোসল করা ওয়াজিব
৫৯৬
আনাস ইবন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, উম্মু সুলায়ম [রাঃআঃ] যিনি ছিলেন [এ হাদীসের রাবী] ইসহাকের দাদী-একদা রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর নিকট এসে বলিলেন, আয়েশাহ [রাঃআঃ] তখন তাহার নিকট উপস্থিত ছিলেন-ইয়া রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]!পুরুষ যেমন স্বপ্নে দেখে, নারীও যদি তা দেখে, এমতাবস্থায় সে কি করিবে? তখন আয়েশা [রাঃআঃ] বলিলেন, উম্মু সুলায়ম! তুমি নারী জাতিকে অপমানিত করেছ। তোমার অকল্যাণ হোক [তার এ কথা ছিল ভাল উদ্দেশ্যে]। অতঃপর রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] আয়েশাহ[রাঃআঃ] কে বলিলেন, বরং তোমার অকল্যাণ হোক! {এরপর উম্মু সুলায়ম [রাঃআঃ] এর যবাবে বলিলেন} হ্যাঁ, উম্মু সুলায়ম! সে গোসল করে ফেলবে যখন ঐরূপ দেখবে। [ইসলামিক ফা:- ৬০০, ই.সে, ৬১৬]
৫৯৭
আনাস ইবন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
উম্মু সুলায়ম [রাঃআঃ] বলেন, তিনি রসুলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন যে ঘুমে পুরুষ যা দেখে তাই দেখিতে পায়। রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, মেয়েলোক যখন তেমনই দেখবে তখন সে গোসল করিবে। উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] বলেন, এ কথায় আমি লজ্জাবোধ করলাম। তিনি বলিলেন, এ রকমও কি হয়? রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] হ্যাঁ, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কেমন করে হয়? পুরুষের বীর্য গাঢ়, সাদা আর মহিলাদের বীর্য পাতলা, হলুদ। দুয়ের মধ্যে থেকে যার বীর্য ওপরে উঠে যায় অথবা আগে চলে যায় [সন্তান] তারই সদৃশ হয়। [ইসলামিক ফা:- ৬০১, ইসলামিক সে.- ৬১৭]
৫৯৮
আনাস ইবন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে ঐ মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন, যে পুরুষ লোক ঘুমের মধ্যে যা দেখিতে পায় সেও তাই। তখন রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বললেনঃপুরুষের যা হয় [স্বপ্নদোষ] মহিলাদেরও এমন হলে সে গোসল করিবে। [ইসলামিক ফা:- ৬০২, ইসলামিক সে.- ৬১৮]
৫৯৯
উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, উম্মু সুলামাহ একদা রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর নিকট এসে বলিলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ]! আল্লাহ তাআলা হক কথা বলিতে লজ্জাবোধ করেন না। তাই মহিলাদের যখন স্বপ্নদোষ হয় তখন কি তার উপর গোসল করা যরুরী? রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বললেনঃহ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখবে। [এ কথা শুনে] উম্মু সালামা [রাঃআঃ] বলিলেন, “ইয়া রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ]! মহিলাদেরও কি স্বপ্নদোষ হয়”? তিনি বলিলেন, তোমার উভয় হাত ধুলিময় হোক! তাহলে তার সন্তান কেমন করে তার সদৃশ হয়? [ইসলামিক ফা:- ৬০৩, ইসলামিক সে.- ৬১৯]
৬০০
উরওয়াহ্ হইতে বর্ণীত আছেঃ
এ সানাদে উপরোক্ত হাদীসের অর্থের অবিকল বর্ণিত আছে। তিনি আরো একটু বাড়িয়ে বলেন যে, তিনি {উম্মু সালামা [রাঃআঃ]} বলিলেন, তুমি নারী জাতিকে লজ্জিত করেছ। [ইসলামিক ফা:- ৬০৪, ইসলামিক সে.- ৬২০]
৬০১
উম্মুল মুমিনীন আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন যে, আবু তালহার সন্তানদের মা উম্মু সুলায়ম একদা রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর নিকট উপস্থিত হয়ে হিশামের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসটিতে ব্যতিক্রম যা রয়েছে তা হল, আয়েশাহ [রাঃআঃ] বলেন, আমি বললাম, “ছিঃ ছিঃ [অসন্তোষ প্রকাশক শব্দ]! মেয়েলোক কি ঐরূপ দেখে?” [ইসলামিক ফা:- ৬০৫, ইসলামিক সে.- ৬২১]
৬০২
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
এক মহিলা রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে বলিল, মেয়েলোকের যখন স্বপ্নদোষ হইবে এবং সে বীর্যরস দেখিতে পাবে তখন কি সে গোসল করিবে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, এরপর আয়েশাহ [রাঃআঃ] মহিলাটিকে বলিলেন, তোমার উভয় হাত ধূলিময় হোক এবং তাতে অস্ত্রের খোঁচা লাগুক। তিনি {আয়েশাহ [রাঃআঃ]} বলেন, তারপর রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, ছেড়ে দাও ওকে [ভর্ৎসনা করো না] সন্তান মা-বাবার সদৃশের কারণেই হয়ে থাকে। যখন স্ত্রীর বীর্য পুরুষের বীর্যের আগে যরায়ুতে প্রবেশ করে তখন সন্তানের আকৃতি তার মামাদের মতই হয়। আর যখন পুরুষের বীর্য মেয়েলোকের বীর্যের উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন তার আকৃতি চাচাদের মতই হয়। [ইসলামিক ফা:- ৬০৬, ইসলামিক সে.- ৬২২]
৮. অধ্যায়ঃ
পুরুষ ও মহিলার বীর্যের বর্ণনা এবং সন্তান যে উভয়ের বীর্য ও শুক্র থেকে সৃষ্টি হয় তার বর্ণনা
৬০৩
রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর মুক্তিপ্রাপ্ত গোলাম সাওবান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আমি একবার রসুলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর কাছে দাঁড়িয়েছিলাম। ইতোমধ্যেই ইয়াহূদীদের এক আলিম এসে বলিল, আসসালামু আলাইকা ইয়া মুহাম্মাদ! এরপর আমি তাকে এমন এক ধাক্কা মারলাম যে, সে প্রায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো! সে বলিল, তুমি আমাকে ধাক্কা মারলে কেন? আমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ্! বলিতে পার না। ইয়াহূদী বলিল, আমরা তাঁকে তাহার পরিবার-পরিযন যে নাম রেখেছে সে নামেই ডাকি। রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, আমার নাম মুহাম্মাদ। আমার পরিবারের লোকই আমার এ নাম রেখেছে। এরপর ইয়াহূদী বলিল, আমি আপনাকে [কয়েকটি কথা] জিজ্ঞেস করিতে এসেছি। রসুলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] তাকে বলিলেন, তোমার কী লাভ হইবে, যদি আমি তোমাকে কিছু বলি? সে বলিল, আমি আমার কান পেতে শুনব। এরপর রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] তাহার কাছে যে খড়িটি ছিল তা দিয়ে মাটিতে আঁকাঝোকা দাগ কাটতে ছিলেন। তারপর বলিলেন, জিজ্ঞেস কর। ইয়াহূদী বলিল, যেদিন এ যমিন ও আকাশমন্ডলী পাল্টে গিয়ে অন্য যমিন ও আকাশমন্ডলীতে পরিণত হইবে [অর্থাৎ কিয়ামাত হইবে] সেদিন লোকযন কোথায় থাকিবে? রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, তারা সেদিন পুলসিরাতের কাছে অন্ধকারে থাকিবে। সে বলিল, কে সর্বপ্রথম [তা পার হবার] অনুমতি লাভ করিবে? তিনি বলিলেন, দরিদ্র মুহাজিরগণ! ইয়াহূদী বলিল, জান্নাতে যখন তারা প্রবেশ করিবে তখন তাদের তোহফা কি হইবে? তিনি বলিলেন, মাছের কলিজার টুকরা। সে বলিল, এরপর তাদের দুপুরের খাদ্য কি হইবে? তিনি বলিলেন, তাদের যন্য জান্নাতের ষাঁড় যাবাহ করা হইবে যা জান্নাতের আশে পাশে চড়ে বেড়ায়। সে বলিল, এরপর তাদের পানীয় কি হইবে? তিনি বলিলেন, সেখানকার একটি ঝর্ণার পানি যার নাম সালসাবীল। সে বলিল, আপনি ঠিক বলেছেন। সে আরো বলিল যে, আমি আপনার কাছে এমন একটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে এসেছি যা নাবী ছাড়া পৃথিবীর কোন অধিবাসী জানে না অথবা একযন কি দুযন লোক ছাড়া। তিনি বলিলেন, আমি যদি তোমাকে তা বলে দেই তবে তোমার কি কোন উপকার হইবে? সে বলিল, আমি আমার কান পেতে শুনব। সে বলিল, আমি আপনাকে সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে এসেছি। তিনি বলিলেন, পুরুষের বীর্য সাদা এবং মেয়েলোকের বীর্য হলুদ। যখন উভয়টি একত্রিত হয়ে যায় এবং পুরুষের বীর্য মেয়েলোকের বীর্যের উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন আল্লাহর হুকুমে পুত্র সন্তান হয়। আর যখন মেয়েলোকের বীর্য পুরুষের বীর্যের ওপর প্রাধান্য লাভ করে তখন আল্লাহর হুকুমে কন্যা সন্তান হয়্।
ইয়াহূদী বলিল, আপনি ঠিকই বলেছেন এবং নিশ্চয়ই্ আপনি নাবী। এরপর সে চলে গেল। তখন রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, এ লোক আমার কাছে যা জিজ্ঞেস করছে, ইতোপূর্বে আমার সে সম্পর্কে কোন জ্ঞানই ছিল না। আল্লাহ্ তাআলা এক্ষনে আমাকে তা জানিয়ে দিলেন। [ইসলামিক ফা:- ৬০৭, ইসলামিক সে.- ৬২৩]
৬০৪
মুআবিয়াহ্ ইবন সাল্লাম হইতে বর্ণীত আছেঃ
একই সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি তার বর্ণনাতে এতটুকু অতিরিক্ত বলেছেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর নিকট বসে ছিলাম। আর তিনি বললেনঃমাছের কলিজার টুকরা আর তিনি আয্কারা ও আ-নাসা শব্দ দুটির একবচন রূপ ব্যবহার করিয়াছেন, দ্বিবচন ব্যবহার করেননি। [ইসলামিক ফা:- ৬০৮, ইসলামিক সে.- ৬২৪]
Reviews
There are no reviews yet.