Description
ইসলাম ও জাহেলিয়াতের দ্বন্দ্ব বই
ইসলাম ও জাহেলিয়াতের দ্বন্দ্ব বইটি কিনুন
সুনানে নাসাই- ৪১৪৮
মালিক ইব্ন আউস ইব্ন হাদাসান [রাদি. আঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আব্বাস এবং আলী [রাদি. আঃ] বিবাদমান অবস্থায় উমার [রাদি. আঃ]-এর কাছে আসেন। এরপর আব্বাস [রাদি. আঃ] বলেনঃ আমার এবং এর মধ্যে ফয়সালা করে দিন। লোকেরাও বললেনঃ এদের মধ্যে বন্টন করে দিন। তখন উমার [রাদি. আঃ] বললেনঃ আমি তাহাদের মধ্যে বন্টন করবো না। তাঁরা নিশ্চয় অবগত আছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ [সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন, কেউ আমাদের ওয়ারিস হয় না। আমরা যা রেখে যাই, তা সাদকা। রাবী বলেনঃ এরপর যুহরী বলেনঃ যে, উমার [রাদি. আঃ] বলিলেন, রাসুলুল্লাহ্ [সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সে সম্পদের মুতাওয়াল্লী ছিলেন। তিনি তা হতে তার পরিবারের খরচ পরিমাণমতো গ্রহন করিতেন এবং অবশিষ্ট যা থাকতো তা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করিতেন। তাহাঁর পরে এই মালের মুতাওয়াল্লী ছিলেন আবু বকর [রাদি. আঃ]। আবু বকরের পর আমি এর মুতাওয়াল্লী হইয়াছি। আমিও ঐরূপই করেছি, যেরূপ তিনি করিতেন। এখন এঁরা দুজন আমার নিকট এসে এই মাল তাঁদেরকে দেয়ার জন্য বলিলেন, যেন তাঁরা মুতাওয়াল্লী হতে পারেন, যেরূপ রাসুলুল্লাহ্ [সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এবং আবু বকর [রাদি. আঃ] মুতাওয়াল্লী ছিলেন এবং আমি এর মুতাওয়াল্লী হইয়াছি। সুতরাং তখন আমি ঐ মাল তাহাদেরকে দিয়ে দিলাম এবং তাহাদের হতে অঙ্গীকার গ্রহন করলাম। পরে তারা উভয়ে আবার আসলেন। একজন বললেনঃ আমার ভাতিজার থেকে আমার অংশ ভাগ করে দিন। অপরজন বলিলেন, আমার স্ত্রীর পক্ষ হতে আমার প্রাপ্য অংশ আমাকে ভাগ করে দিন। তিনি বললেনঃ যদি তারা সম্মত হন তাহলে আমি এই মাল তাহাদেরকে দিয়ে দিবো এই শর্তে যে, তারা মালের ব্যাপারে ঐরূপ কাজ করবেন, যেরূপ রাসুলুল্লাহ্ [সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] করিতেন এবং তারপরে আবু বকর [রাদি. আঃ] করিতেন এবং তাহাঁর পরে আমি করেছি। যদি তাঁরা দুজন এতে সম্মত না হন তাহলে তাঁরা যেনো তাহাদের ঘরে বসে থাকেন, আর মাল আমি আমার তত্ত্বাবধানে রাখবো। এরপর উমার [রাদি. আঃ] বললেনঃ মালের গনিমত সম্বন্ধে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ জেনে রাখ, যুদ্ধে যা তোমরা লাভ কর, তাহাঁর এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহ তায়ালার, রাসুলের এবং নিকটাত্মীয়দের, ইয়াতীমদের, মিসকিনদের ও মুসাফিরদের। আল্লাহ আরো বলেনঃ আর সাদকা ফকীর, মিসকীন, তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের এবং যাদের হৃদয় আকৃষ্ট করা হয় তাহাদের জন্য, দাস মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্ত ও আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য। যে মাল আল্লাহ তায়ালা তাহাঁর রাসুলকে দান করিয়াছেন। তোমরা তাতে নিজেদের ঘোড়া বা উট হাঁকাও নি। যুহরী [র. আলাইহি] বলেনঃ এই মাল রসুলুল্লাহ [সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর জন্য নির্দিষ্ট, আর তা হলো, কয়েকটি আরব গ্রাম, তথা ফিদক এবং অন্যান্য। এই মালের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ জনপদবাসীদের থেকে যে মাল আল্লাহ তায়ালা তাহাঁর রাসুলকে দান করিলেন, তা আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসুলের, রাসূলের স্বজনদের, ইয়াতীম, মিসকিন, মুসাফিরদের। আল্লাহ তায়ালা আরো বলেনঃ এ সম্পদ ঐ অভাবগ্রস্ত মুহাজিরদের জন্য, যারা নিজেদের ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি থেকে উৎখাত হইয়াছে। মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ এই মালে ঐ সকল লোকের হোক রয়েছে। যারা মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে এই নগরীতে এসে বসবাস করেছে এবং ঈমান এনেছে। আর ঐ সকল লোকেরও হক রয়েছে, যারা এদের পরে এসেছে। এই আয়াতে প্রত্যেক মুসলমান শামিল রয়েছে, কোন মুসলমানই অবশিষ্ট নেই যাহার এ মালে হক নেই। তবে তোমাদের মাঝে কিছু দাস-দাসী রয়েছে, যাদের এ মালে হক নেই। এরপর উমার [রাদি. আঃ] বলেনঃ যদি আমি জীবিত থাকি, তবে ইন্শাআল্লাহ প্রত্যেক মুসলমানের কাছে তার হক পৌঁছে যাবে।
সুনানে নাসাই-৩৪৮৭
আয়েশা [রাদি. আঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস [রাদি. আঃ] এবং আব্দ ইবনু যামআ [রাদি. আঃ] যামআর সন্তান নিয়ে বিবাদ করিলেন। সাদ বলেনঃ আমার ভাই উতবা আমাকে ওসীয়ত করেছিলেন যে, যখন তুমি মক্কায় গমন করিবে যামআর বাঁদীর সন্তানকে দেখবে; কেননা সে আমার সন্তান। আর আব্দ ইবনু যামআ বলিলেন, সে আমার পিতার বাঁদীর সন্তান, সে আমার পিতার শয্যায় [আধিপত্যে] জন্মলাভ করেছে। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃ] লক্ষ্য করে দেখলেন, উতবা [রাদি. আঃ]-এর সাথে তার পরিষ্কার সাদৃশ্য রয়েছে। রসূলুল্লাহ্ [সাঃ] বললেনঃ সন্তান বিছানার [অর্থাৎ তারই জন্য, যাহার জন্য বিছানা]। তিনি আরও বললেনঃ হে সওদা! তুমি তার থেকে পর্দা করিবে।
এই হাদীসের তাহকীকঃসহীহ হাদীস
সন্তান নিয়ে বিবাদ হলে লটারীর ব্যবস্থা করা এবং যায়দ ইবনু আরকাম [রাদি. আঃ] হতে বর্ণিত এ বিষয়ের হাদীসে শাবী [র. আলাইহি]-এর বর্ণনায় বিরোধ
নাসাই-৩৪৮৮
যায়দ ইবূন আরকাম [রাদি. আঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ইয়ামানে অবস্থানকালে আলী [রাদি. আঃ]-এর নিকট তিনজন লোক নিয়ে আসা হল, যারা সকলে এক মহিলার সাথে একই তুহরে১ সহবাস করেছিল। তিনি তাহাদের দুইজনকে পৃথক করে বললেনঃ তোমরা উভয়ে কি এই সন্তানকে তৃতীয় ব্যক্তির সন্তান বলে স্বীকার কর? তারা বললেনঃ না। পরে তিনি অন্য দুইজনকে বললেনঃ তোমরা দুইজন কি এই সন্তানকে তৃতীয় ব্যক্তির সন্তান বলে স্বীকার কর? তারাও বললেনঃ না। এরপর তিনি উক্ত তিন ব্যক্তির নামে লটারী করিলেন। লটারীতে যাহার নাম উটলো, তাকে তিনি সন্তান দিয়ে দিলেন। আর তার উপর দিয়াতের অর্থাৎ মূল্যের দুই-তৃতীয়াংশ সাব্যস্ত করিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃ]-এর নিকট এ ঘটনা আমরা বর্ণনা করলে তিনি হাসলেন, যাতে তাহাঁর মাড়ির দাঁত মুবারক দেখা গিয়েছিল।{১} স্ত্রীলোকের দুই হায়েযের মধ্যবর্তী সময়কে তুহর [বা পবিত্রতার সময়] বলা হয়।
এই হাদীসের তাহকীকঃসহীহ হাদীস
নাসাই-৩৮৯৯
হানযালা ইবন্ কায়স আল-আনসারী [র. আলাইহি] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাফে ইবন্ খাদীজ [রাদি. আঃ] -কে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিনিময়ে ভূমি বর্গা দেয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলিলেন, এতে কোন দোষ নেই। রসূলুল্লাহ [সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] –এর যুগে লোকেরা বড়-ছোট নালার পাশে উৎপন্ন ফসলের বিনিময়ে ভূমি বর্গা দিতেন। কোন সময়ে এটায় ফসল ফলতো, ওটায় ফসল ফলতো না। আবার কোন সময়ে ওটায় ফসল ফলতো, এটাতে ফলতো না [এতে লোকের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হত]। তখন বর্গা বলিতে এই ছিল। এ জন্য তা থেকে নিষেধ করা হইয়াছে। তবে যদি নির্দিষ্ট কিছুর বিনিময়ে বর্গা দেওয়া হয় যা কেরায়া গ্রহীতার দায়িত্বে থাকিবে তবে কোন অসুবিধা নেই।
নাসাই-৩৪৯৬
আবু মায়মূনা [রাদি. আঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ [একদিন] আমি আবু হুরায়রা [রাদি. আঃ]-এর নিকট বসা ছিলাম, তখন তিনি বলিলেন যে, এক মহিলা রসূলুল্লাহ [সাঃ]-এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললেনঃ আমার পিতা মাতা আপনার উপর কুরবান হোক। আমার স্বামী আমার নিকট হতে আমার ছেলেকে নিয়ে যেতে চায়। অথচ তার দ্বারা আমার অনেক উপকার হইয়া থাকে। সে আবু ইনাবা কূপ থেকে পান এনে আমাকে পান করায়। এমন সময় তার স্বামী সেখানে এসে বললেনঃ আমার ছেলের ব্যাপারে আমার সাথে কে বিবাদ করেছে ? তখন তিনি [নাবী সঃ] বলিলেন, হে ছেলে ! এই তোমার পিতা, আর এই তোমার মাতা, এদের মধ্যে তোমার যাহার ইচ্ছা হাত ধর। তখন ছেলে তার মার হাত ধরলো এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে চলে গেল।
ইসলাম ও জাহেলিয়াতের দ্বন্দ্ব বই
Reviews
There are no reviews yet.