Description
সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্যরক্ষায় সরিষার তেল
সরিষার তেল প্রাচীন বাংঙালি রান্নার একটি অতি পরিচিত উপাদান। সরিষার তেলের ঝাঝলো স্বাদ রসনার তৃপ্তিকে আরও মুখ রোচক করা তোলে। শুধুমাএ রান্নায় নয় ত্বকের এবং চুলের যত্নে ও সেরা সরিষার তেল । খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ বছর আগে থেকেই সরিষার তেলের ব্যবহার শুরু হয়। প্রাচীন গ্রীক, রোম ও মিসরীয় সভ্যতায় সরিষার তেল ব্যবহার বেশ লক্ষণীয় ।
স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি দেশি খাঁটি সরিষার তেল
হার্টকে সুরিক্ষত রাখে সরিষার তেল। ২০০৪ সালের আমেরিকা জার্নাল অফ কিনিক্যাল নিউট্রিশনের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে,শরীরে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল (LDL) কে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনে। শরীরে ভাল কোলেস্টেরল এইচডিএল (HDL) বৃদ্ধি করে। ফলে সুষম একটি কোলেস্টেরলের ব্যালেন্স চলে আসে। প্রতিরোধ করে কিডনির অন্যান্য রোগকে।
সরিষার তেলে থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল উপাদান শরীরের ভিতরকার ক্ষতিকারক কোলনের ইনফেকশন জীবাণু গুলো ধ্বংস করে থাকে। তাছাড়া শরীরের বাহিরের চামড়া থাকা ত্বকে থাকা যে কোন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
সরিষার তেলে থাকা লিউনিক এসিড যা পরবর্তীতে ওমেগা ফ্যাটি এসিড পরিণত হয়ে পাকস্থলী কে ক্যানসারের হাত থেকে রক্ষা করে। এক গবেষণা দেখা গেছে, সরিষার তেলে থাকা ওমেগা ফ্যাটি -৩ এসিড মাছের তেলে থাকা ফ্যাটি এসিডের থেকেও বেশি কার্যকর।
সরিষার তেল প্রাকৃতিক ভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধি কারক। কারণ শরীরের ভিতরে থাকা বিষাক্ত টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং মেটাবলিজম সিস্টেম কে উন্নত করে। তাছাড়া ব্লাড সার্কুলেশন নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
বর্তমান সময়ে ঠান্ডা জনিত সমস্যা বেশ প্রকট। বাতাসে ধূলাবালি বেড়ে যাওয়ার কারনে ছোট থেকে বড় সবাই ঠান্ডা জনিত সকল প্রকার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রায়শই।
প্রাচীনকাল থেকে সরিষার তেল ঠান্ডা জনিত রোগে অধিক ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ সরিষা তেলে রয়েছে হিটিং প্রোপার্টিজ যা বুকে জমে থাকা কফ বের হতে সাহায্য করে। সাথে অন্যান্য ঠান্ডার রোগ যেমনঃ মাথা ব্যাথায়, নাক দিয়ে পানি পড়া ও হাতে পায়ে মালিশে ও বেশ কার্যকর। ছোট বেলার মায়ের হাতের গরম রসুন -সরিষার তেল মালিশ কিন্তু তার বড় উদাহরণ।
যাদের জয়েন্ট পেইন রয়েছে তারা সরিষার তেলে নিয়মিত মালিশ বেশ উপকারি। কারণ নিয়মিত ব্যাথা স্থানে মালিশের ফলে রক্ত প্রবাহের মাএা বেড়ে যাএ এবং শরীরে অক্সিজেনের মাএা বৃদ্ধি পায়। একটু খেয়াল করলে দেখবেন, কবিরাজরা কিন্তু মালিশের তেলে সরিষার তেল ব্যবহার করে থাকেন।
এজেমার সমস্যা কিন্তু বর্তমানে কম নয়। আর এই রোগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্থায়ী কোন প্রতিষেধক নেই। সরিষার তেল এজমা রোগিদের জন্য বিশেষ ভাবে উপকারি। নিয়মত বুকে সরিষার তেলের মালিশ আপনাকে অনেকটা আরাম দিবে কোন পাশ্ব – প্রতিক্রিয়া ছাড়া। নিয়মিত মধুর সাথে মিশিয়ে এক টেবিল চা-চামচ দিনে তিন বার খেলে বেশ আরাম পাওয়া যায়।
মশার কামড়ে সবাই প্রায় অতিষ্ঠ। সরিষার তেল কিন্তু আপনাকে এই মশার কামড় থেকে রক্ষা করবে। শুধু মাএ বাহিরে বের হওয়ার আগে শরীরে মেখে নিতে হবে। কারন সরিষার তেলে এন্টিব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টি গুলো মশাদের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এক গবেষণয়া দেখা গেছে, সরিষার তেল বেশিক্ষণ কার্যকর থাকে মশার কামড় থেকে সুরক্ষা দেয় অন্যান্য এসেনশিয়াল তেল থেকে৷
সরিষার তেলের উচ্চ মাএার ফ্যাটি এসিড ব্রেইনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারন এতে থাকা কনজাংটিক ফাংশন প্রোপার্টিজ ব্রেইনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই প্রোপাটিজ শিশুদের জন্য বেশ উপকারি বিশেষ করে পরিক্ষার সময়। কারণ ব্রেইনের কার্যক্রম বৃদ্ধি তখন দ্বিগণ হারে প্রয়োজন হয়।
ত্বকের যত্নে সরিষার তেল
সরিষার তেল যে শুধু শরীরে অভ্যন্তরীণ ভাবে উপকার করে থাকে তা কিন্তু নয় ত্বকের যত্নেও সরিষার তেলের কদর বেশ আগে থেকেই।
সরিষার তেলে ময়শ্চারাইজ মুখের ব্রণের সমস্যা, বয়সের বলিরেখা, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ছোপ ছোপ দাগ দূর করে থাকে। এক চামচ ময়দা, এক চামচ টক দই, কিছুটা লেবুর রস এবং সাথে এক চামচ সরিষার তেল ফেস প্যাক তৈরি করে মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখে রেখে পরে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে তিন নিয়মিত ব্যবহারে ফলাফল নিজেই লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন।
সরিষার তেল রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন – ই যা ত্বক ও চুলের যত্নে বিশেষ ভাবে দরকারী। তাছাড়া এতে আরও রয়েছে ভিটামিন -এ, বি কমপ্লেক্স। তারণ্যময় ত্বকের জন্য প্রতিরাতে সমপরিমাণ নারিকেল তেল এবং সরিষার তেলের মিশ্রন মুখে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য। এতে বয়সের বলিরেখা দূর করা সহ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
সরিষার তেলকে প্রাকৃতিক সানক্রিম বলা হয়। এতে থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টিজ সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
চুলের যত্নে সরিষার তেল
সরিষার তেলকে বলা হয় চুলের কমপ্লিট প্রোটিন প্যাক।
সরিষার তেলের চুলের বৃদ্ধিতে এবং ঘন কালো করতে সাহায্য করে। কারন চুলের যত্নে মাথার ত্বকের সুস্থতা বেশ প্রয়োজনীয়। সরিষার তেলের নিয়মিত ম্যাসেজ মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে খুশকি কে রাখবে দূরে। সরিষার তেলে আরও রয়েছে প্রোটিন এবং ওমেগা ফ্যাটি-৩ এসিড যা চুলের জন্য বেশি প্রয়োজনীয়। নিয়মিত সরিষার তেলের ব্যবহারে চুলের মিলবে সব রকম পুষ্টি।
সরিষার তেলের পুষ্টিগুন অনেক তা তো জানা হল। ভেজালের ভিড়ে আসল সরিষার তেল চিনা কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু প্রশ্নটি হচ্ছে খাটিঁ সরিষার তেল কোথায় পাবো?
খাটিঁ ও স্বাস্থ্যকর সরিষার তেল পাবেন আমাদের কাছে।
Reviews
There are no reviews yet.