Select Page

মুসনাদে আহমদ ১ম খন্ড – ইসলামিক ফাউন্ডেশন

৳ 475.00

Title: মুসনাদে আহমাদ ১ম খণ্ড

Author: ইমাম আহম্মদ ইবনে হাম্বল

Publisher: ইসলামিক ফাউন্ডেশন

Country: বাংলাদেশ

Language: বাংলা

Description

মুসনাদে আহমদ ১ম খন্ড

১। আবু আবদুর রহমান আবদুল্লা ইবনে আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল বলেনঃ আমাকে আমার পিতা আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল বিন হিলাল বিন আসাদ তদীয় পুস্তক থেকে জানিয়েছেন এবং বলেছেনঃ আমাকে আবদুল্লা বিন নুমায়ের বলেছেন, আমাকে ইসমাইল [অর্থাৎ খালিদের পিতা] কায়েস থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, একদিন আবু বাকর [রাঃআঃ] যনসমক্ষে দাঁড়ালেন, আল্লাহর প্রশংসা করিলেন, অতঃপর বললেনঃ হে যনগণ! তোমাদের মধ্যে যে কোন ব্যক্তি এ আয়াত পাঠ করে থাকেঃ

অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের ব্যাপারে সাবধান হও। তোমরা নিজেরা যখন হিদায়াত লাভ করিবে [সৎপথে চলবে] তখন যে ব্যক্তি বিপথগামী হয়েছে, সে তোমাদের কোন ক্ষতি করিতে পারবে না”। [মায়েদাঃ ১০৫]

কিন্তু আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বলিতে শুনেছিঃ “লোকেরা যখন অন্যায় সংঘটিত হইতে দেখবে, অথচ তার প্রতিরোধ করিবে না, তখন অচিরেই আল্লাহ্ তাদের ওপর সর্বব্যাপী আযাব নাযিল করবেন।” [অর্থাৎ অন্যায়কারী ও অন্যায় সহ্যকারী-সকলেই সেই আযাবে নিপতিত হইবে।] {১}

{১}. হুমায়দী, ইবনে আবি শায়বাহ আবদ বিন হুমাইদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, বাযযার, মারওয়ায, আবু ইয়ালা, তাহাবী, ইবনে হিব্বান, বাইহাকী ও বাগাওয়ী নিয নিয হাদীস গ্রন্থে এবং আত্‌তাবারী তদীয় তাফসীরে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করিয়াছেন। এর সকল বর্ণনাকারী বিশ্বস্ত। অত্র মুসনাদেও ১৬, ২৯, ৩০ ও ৫৩ নং হাদীসে এর পুনরাবৃত্তি লক্ষণীয়।

 

 

পরিচ্ছেদঃ

২। আলী [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি যখন সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট থেকে কোন হাদীস শুনতাম, তখন তা দ্বারা আল্লাহ আমাকে যতটা ইচ্ছা উপকৃত করিতেন। আর যখন অন্য কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে শ্রুত কোন হাদীস আমাকে জানাতো, তখন আমি তারকাছ থেকে শপথ নিতাম [যে, সে সত্যই নিয কানে হাদীসটি হুবহু শুনেছে কিনা] যখন সে শপথ করতো, কেবল তখনই আমি তাকে বিশ্বাস করতাম। আবু বাকর আমাকে একটা হাদীস শুনিয়েছেন এবং তিনি সত্যই বলেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বলিতে শুনেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি কোন গুনাহর কায করে, তার অব্যবহিত পর খুব ভালভাবে ওযূ করে, [মিসয়ারের বর্ণনা মুতাবিক, অতঃপর নামায পড়ে, সুফিয়ানের বর্ণনা মুতাবিক, অতঃপর দুরাকআত নামায পড়ে] অতঃপর মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা চায়, তখন অবশ্যই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন।{১}

{১} তায়ালিসী, হুমাইদী, ইবনে আবী শাইবা, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাই, ইবন মাজাহ, বাযযার, আবু ইয়ালা, আত-তাবারী, উকাইলী, মারওয়াযী, ইবন হিব্বান, তাবারানী, তুম্মাম, আবু নাইম, বাগাওয়ী ও ইবনে আবি হাতেম নিয নিয হাদীস গ্রন্থে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করিয়াছেন। মুসনাদে আহমাদেও ৪৭ ও ৪৮ নং হাদীসে এর পুনরাবৃত্তি হয়েছে।

 

 

পরিচ্ছেদঃ

৩। বারা ইবন আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত, তিনি বলেন, একবার হযরত আবু বাকর আযিবের কাছ থেকে তেরো দিরহাম দিয়ে একটি জিন [উট বা ঘোড়ার পিঠে বসার কাঠ নির্মিত আসন] কিনলেন। অতঃপর আবু বাকর [রাঃআঃ] আযিব [রাঃআঃ] কে বলিলেন, বারাকে আদেশ দাও সে যেন জিনটি আমার বাড়িতে পৌছিয়ে দেয়। আযিব বললেনঃ না, আপনি যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে সাথে নিয়ে [মদীনা অভিমুখে হিযরাত করিতে] বের হয়েছিলেন, তখনকার ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ আমাকে না বলা পর্যন্ত আমি বারাকে জিন পৌছে দিতে আদেশ দেব না। তখন আবু বাকর নিম্নরূপ বিবরণ দিলেনঃ

“আমরা রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে বের হলাম। পুরো একদিন ও একরাত বাহক যন্তুটিকে দ্রুত গতিতে চালাতে লাগলাম। যখন দুপুর হলো, চারদিকে তাকিয়ে খুঁযতে লাগলাম, কোথাও একটু ছায়া পাওয়া যায় কিনা যার নিচে আমরা আশ্রয় নিতে পারি। একটু পরে একটা ছোট পাহাড় দেখেই সেদিকে ছুটে গেলাম। দেখলাম তার ছায়ার কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে। তাই আমি সেই ছায়াটুকুতেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবস্থানের ব্যবস্থা করলাম এবং একটি পশুর চামড়া তাঁকে বিছিয়ে দিলাম। তারপর আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি এখানে শুয়ে পড়ুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ শুয়ে পড়লেন। এরপর আমি বেরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখিতে লাগলাম, আমাদের তালাশ করছে এমন কাউকে দেখা যায় কিনা।

সহসা দেখলাম, আমার কাছেই একযন রাখাল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে কিশোর, তুমি কার মেষপাল চরাও? সে বললোঃ কুরাইশের এক ব্যক্তির। সে ঐ ব্যক্তির নাম বললো এবং আমি তাকে চিনলাম। আমি বললামঃ তোমার মেষপালে কি দুধ আছে? সে বললোঃ আছে। আমি বললামঃ তুমি কি আমার যন্য একটু দুধ দুইয়ে দেবে? সে বললোঃ দেব। অতঃপর আমি তাকে একটা ছাগল বাঁধতে আদেশ দিলে সে একটা ছাগল বাঁধলো। তারপর আমি তার স্তন থেকে ধুলো মুছতে আদেশ দিলে সে তা মুছে ফেললো। তারপর আমি বললামঃ তোমার দুই হাতের তালুর ধুলো মুছে ফেল। সে মুছে ফেললো। আমার কাছে একটা পাত্র ছিল- যার মুখ ন্যাকড়া দিয়ে ঢাকা ছিল। রাখাল আমার যন্য বেশ খানিকটা দুধ দোহালো। অতঃপর আমি পেয়ালায় পানি ঢেলে তার তলা ঠাণ্ডা করলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলাম এবং তাকে জাগ্রত অবস্থায় পেলাম। বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! দুধ পান করুন। তিনি পান করিলেন এবং তা দেখে আমি তৃপ্তি বোধ করলাম।

তারপর বললামঃ এখন কি রওনা হবার সময় হয়েছে? অতঃপর আমরা রওনা হলাম। তখনো কুরাইশের লোকেরা আমাদের তালাশ করছিল। তাদের মধ্য থেকে একযন ঘোড় সওয়ার সুরাকা ইবনে মালিক আমাদেরকে দেখে ফেললো। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, ঐ যে একযন সন্ধানকারী আমাদের সন্ধান পেয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ দুশ্চিন্তা করো না। আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। সুরাকা আমাদের দিকে আরো এগিয়ে এল এবং এত কাছে এল যে, আমাদেরও তার মধ্যে একটা, দুইটা বা তিনটে বর্শার ব্যবধান ছিল। আমি আবার বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই যে সন্ধানকারীরা আমাদের সন্ধান পেয়ে গেছে। আমি কেঁদে ফেললাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ কাঁদছ কেন? আমি বললামঃ আল্লাহর কসম! আমি নিজের যন্য কাঁদছিনা। আমি শুধু আপনার যন্য কাঁদছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ সুরাকার বিরুদ্ধে এই বলে বদদেয়া করিলেন-اللهُمَّ اكْفِنَاهُ بِمَا شِئْتَ “হে আল্লাহ, তুমি যেভাবে চাও, ওকে প্রতিহত করিতে যথেষ্ট হয়ে যাও।”

সঙ্গে সঙ্গে তার ঘোড়ার পাগুলো কঠিন মাটিতে তার পেট পর্যন্ত দেবে গেল। সুরাকা তার পিঠের ওপর থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়লো। অতঃপর সে বললোঃ হে মুহাম্মাদ, আমি বুঝেছি, এটা তোমার কায। সুতরাং তুমি আল্লাহর কাছে দুআ কর। যেন আমি যে দুর্দশায় পতিত হয়েছি, তা থেকে তিনি আমাকে নিষ্কৃতি দেন। আল্লাহর কসম! আমার পেছনে অন্য যারা তোমার অনুসন্ধান করছে, তাদের কাউকে আমি তোমাদের খবর জানাবো না। এই যে আমার তীর ধনুক। এখান থেকে একটা তীর নিয়ে নাও। তুমি অমুক জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় আমার উট ও মেষপাল পাবে। সেখান থেকে যে কটা দরকার নিয়ে নিও। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ ওগুলোর আমার প্রয়োযন নেই।

এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ সুরাকার যন্য দুআ করিলেন। সে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেল এবং তার দলবলের কাছে ফিরে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ চলতে লাগলেন। আমিও তার সাথে চলতে লাগলাম। অবশেষে মদীনায় পৌছলাম। মদীনাবাসী রাস্তায় নেমে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে অভ্যর্থনা জানালো। রাস্তায় শিশু কিশোররা প্রবল ভীড় যমিয়ে ধ্বনি তুললোঃ “আল্লাহু আকবার, রাসূলুল্লাহ এসেছেন, মুহাম্মাদ এসেছেন”। এরপর মদীনাবাসী প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে গেল কে আগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেহমানদারী করিবে তা নিয়ে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলিলেন- আযকের রাতটা আবদুল মুত্তালিবের মামাবাড়ি বনু নাজ্জারদের বাড়িতে কাটিয়ে তাদেরকে সম্মানিত করবো। পরদিন সকালে যে দিকে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ পেলেন সেদিকে রওনা হলেন।

বারা বিন আযিব বলেনঃ আমাদের কাছে প্রথম হিযরাত করে যিনি এলেন, তিনি ছিলেন বনু আবদুদ্দারের মুসয়াব বিন উমাইর। তারপর বনু ফিহরের অন্ধ ইবনে উম্মে মাকতুম। তারপর বিশযন আরোহীসহ ওমর ইবনল খাত্তাব। আমরা ওমরকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ কোথায়? তিনি বলিলেন, তিনি আমার পরে আসছেন। এরপরই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ ও আবু বাকর এলেন, তখন আমি কয়েকটি লম্বা সূরা মুখস্থ করে ফেলেছি। বর্ণনাকারী ইসরাইল বলেছেনঃ বারা ছিলেন বনু হারেসা নামক আনসার গোত্রের লোক।

{বুখারী, ৩৬১৫, মুসলিম, ২০০৯, ইবন হিব্বান ২৬৮১, বুখারী এটিকে সহীহ সাব্যস্ত করিয়াছেন।}

পরিচ্ছেদঃ

৪। যায়িদ বিন ইউসাই হযরত আবু বকর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ তাঁকে মক্কাবাসীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করিলেন। সেই সাথে তাকে এ ঘোষণা দিতেও আদেশ দেন যে, এ বছরের [৯ম হিযরীর অর্থাৎ বিদায় হজ্জের পূর্ববর্তী বছরের] পর আর কোন মুশরিক হজ্জ করিতে পারবে না। আর কোন নগ্ন ব্যক্তি পবিত্র কাবা ঘরের তাওয়াফ করিতে পারবে না। মুসলিম ব্যক্তি ব্যতীত কেউ জান্নাতে যাবে না, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে যার কোন নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত নিরাপত্তার চুক্তি হয়েছে, তার চুক্তি সেই মেয়াদ পর্যন্ত বহাল থাকিবে। অতঃপর আল্লাহ ও তার রাসূলের মুশরিকদের সাথে কোন সম্পর্ক থাকিবে না। এই ঘোষণা দেয়ার যন্য হযরত আবু বকরের রওনা হয়ে যাওয়ার পর তিন দিন অতিবাহিত হলো। অতঃপর তিনি আলী [রাঃআঃ] কে বলিলেন, তুমি গিয়ে আবু বাকরের সাথে মিলিত হও। তাকে আমার কাছে ফেরত পাঠাও এবং এ ঘোষণাগুলো তুমি নিজে দাও।

আলী [রাঃআঃ] তাই করিলেন। অতঃপর আবু বাকর [রাঃআঃ] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ফিরে এসেই কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার দ্বারা কি কিছু ঘটেছে? [অর্থাৎ কোন অন্যায় কায হয়েছে?] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ তোমার দ্বারা ভালো কায ছাড়া কিছুই সংঘটিত হয়নি। তবে আমাকে আদেশ দেয়া হয়েছে যে, এই কথাগুলো যেন আমি স্বয়ং অথবা আমার কোন লোক ব্যতীত আর কেউ ঘোষণা না করে।{১}

{১}. হাদীসটির সনদ দুর্বল। ইমাম আহমাদ বলেছেনঃ এটি একটি দুর্বল হাদীস। ইমাম ইবনে তাইমিয়া তাহার  গ্রন্থ মিনহাজের ৫ম খণ্ডের ৬৩ পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ “আমার পক্ষ থেকে আলী ব্যতীত আর কেউ এ দায়িত্ব পালন করিবে না” এ উক্তি মিথ্যা।

 

পরিচ্ছেদঃ

৫। একবার আবু বাকর [রাঃআঃ] তাহার  ভাষণে বলেন: গত বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ আমার এই জায়গায় দাঁড়িয়ে নামায পড়িয়েছিলেন। এ কথা বলে আবু বাকর [রাঃআঃ] কাঁদতে লাগলেন। তারপর বললেনঃ তোমরা আল্লাহর নিকট সুস্থতা কামনা কর। কেননা ইয়াকীনের [দৃঢ় বিশ্বাস বা মযবুত ইমান] পর কেউ সুস্থতার চেয়ে উত্তম কোন জিনিস প্রাপ্ত হয়নি। [অর্থাৎ ইমানের পর সুস্থতা আল্লাহর শ্রেষ্ঠতম নিয়ামত।] তোমরা সত্যবাদিতাকে আঁকড়ে ধর। কেননা তা পুণ্যের সাথে যুক্ত। এই দুটোই জান্নাতে যাওয়ার উপকরণ। তোমরা মিথ্যাচার থেকে সাবধান থাক। কেননা মিথ্যাচার পাপাচারের অন্তর্ভুক্ত। এই দুটোই জাহান্নামে যাওয়ার উপকরণ। তোমরা পরস্পরে হিংসা করো না, বিদ্বেষ পোষণ করো না, সম্পর্কচ্ছেদ করো না। একে অন্যের পেছনে লেগো না। বরঞ্চ আল্লাহর নির্দেশ মুতাবিক ভাই ভাই হয়ে থাক।{১}

{১}. ইবন হিব্বান [৯৫২], ও আল হাকেম [১/৫২৯] কর্তৃক সহীহ বলে অভিহিত। আলবানী বলেছেনঃ সহীহ। [ইবন মাজাহ-৩৮৪৯] অত্র হাদীস গ্রন্থে ১৭, ৩৪ ও ৪৪ নং হাদীস দ্রষ্টব্য।

 

 

পরিচ্ছেদঃ

৬। আবু বাকর [রাঃআঃ] একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বরে দাঁড়িয়ে বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বলিতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা উচ্চারণের সাথে সাথে আবু বাকর কেঁদে ফেললেন, অতঃপর শান্ত হলেন। তারপর বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে গত বছর ঠিক এই গ্রীষ্মে বলিতে শুনেছিঃ “তোমরা আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষমা, সুস্থতা ও মযবুত ইমান কামনা কর।”{১}

{১}. তিরমিযী বলেছেনঃ এটি একটি ভালো ও বিরল হাদীস। [তিরমিযী-৩৫৫৮] [অত্র গ্রন্থের ৫ নং হাদীস দ্রষ্টব্য।

 

পরিচ্ছেদঃ

৭। আবু বাকর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলেছেনঃ দাঁত মাজা মুখ পবিত্র করে ও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে।

 

পরিচ্ছেদঃ

৮। আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] বলেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বলেছিলেন আমাকে এমন একটি দুআ শিখিয়ে দিন, যা দ্বারা আমি নামাযের মধ্যে দুআ করিতে পারি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলেছেন, এই দুআটি পড়ঃ

اللهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا، وَلا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

অর্থাৎ হে আল্লাহ, আমি নিজের ওপর অনেক অত্যাচার করেছি। তুমি তোমার পক্ষ হইতে আমার গুনাহ মাফ করে দাও এবং আমার প্রতি করুণা কর। নিশ্চয়ই তুমিই ক্ষমাশীল ও দয়াশীল”। [হাদীস নং ২৮ দ্রষ্টব্য] অন্য বর্ণনায় “অনেক অত্যাচার” এর পরিবর্তে “বিরাট অত্যাচার” বলা হয়েছে। {১}

{১}. {ইমাম বুখারী [৮৩৪] ইমাম মুসলিম [২৭০৫] ইবন খুযাইমা [৮৪৫] ও ইবন হিব্বান [১৯৭৬] এ হাদীসকে সহীহ আখ্যায়িত করিয়াছেন}

 

পরিচ্ছেদঃ

৯। ফাতিমা [রাঃআঃ] ও আব্বাস [রাঃআঃ] আবু বাকরের কাছে এলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিত্যক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইলেন। তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফাদাকের যমি ও খাইবারের যমির অংশ চাইছিলেন। আবু বকর [রাঃআঃ] তাঁদেরকে বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বলিতে শুনেছিঃ আমাদের সম্পত্তির কোন উত্তরাধিকারী হয় না। আমরা [নাবীরা] যা রেখে যাই, তা সাদাকা। মুহাম্মাদের বংশধরগণ, স্বগোত্রীয়রা, আত্মীয়স্বযন ও সঙ্গী সাথীরা সবাই এ সম্পত্তি ভোগ করিবে। আল্লাহর কসম! আমি প্রতিটি ব্যাপারেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে যা করিতে দেখেছি, তা ছাড়া অন্য কিছু করবো না।{১}

{১}. বুখারী [৪০৩৫], মুসলিম [১৭৫৯], ও ইবন হিব্বান [৪৮২৩] কর্তৃক সহীহ আখ্যায়িত] অত্র গ্রন্থের হাদীস নং ২৫, ৫৫ ও ৫৮ দ্রষ্টব্য

 

পরিচ্ছেদঃ

১০। আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেন, আমি এই মিম্বারে [অর্থাৎ মসজিদে নববীর মিম্বারে] দাঁড়িয়ে আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে গত বছর এই দিনে বলিতে শুনেছি … পর্যন্ত বলেই আবু বকর [রাঃআঃ] অশ্রু বর্ষণ করিতে লাগলেন ও কাঁদতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পর বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বলিতে শুনেছিঃ “আল্লাহর একত্বের বাণীর পর তোমাদেরকে সুস্থতার সমতুল্য আর কোন জিনিস দেয়া হয়নি। সুতরাং তোমরা আল্লাহর কাছে সুস্থতা প্রার্থনা কর।{১}

{১}. ইবন হিব্বান এ হাদীসকে সহীহ আখ্যায়িত করিয়াছেন [৯৫০] [অত্র গ্রন্থে ৫ নং হাদীস দ্রষ্টব্য।

 

পরিচ্ছেদঃ

১১। আনাস [রাঃআঃ] বলেন, আবু বাকর আস সিদ্দিক তাকে বলেছেনঃ “আমি গুহার ভেতরে থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বললামঃ তাদের [কুরাইশদের] কেউ যদি তার পায়ের নিচের দিকে তাকায় তাহলে আমাদেরকে দেখিতে পাবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ হে আবু বাকর, যে দুযনের তৃতীয় সাথী আল্লাহ, তাদের সম্পর্কে তুমি কী ধারণা পোষণ করা? [অর্থাৎ এই গুহায় আল্লাহ আমাদের সাথী। তোমার দুশ্চিন্তার কোন প্রয়োযন নেই। – অনুবাদক]{১}

{১}. ইমাম বুখারী [৩৬৫৩], ইমাম মুসলিম [২৩৮১] এবং ইবন হিব্বান, [৬২৭৮] একে সহীহ আখ্যায়িত করিয়াছেন।

 

পরিচ্ছেদঃ

১২। আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ আমাদেরকে বলেছেনঃ প্রাচ্যের খোরাসান নামক একটি জায়গা থেকে দাজ্জাল আবির্ভূত হইবে। এমন কিছু যনগোষ্ঠী তার অনুসরণ করিবে যাদের মুখমণ্ডল হাতুড়ি পিটিয়ে বানানো ঢাল সদৃশ।{১}

{১}. ইমাম তিরমিযীর মতে এটি একটি ভালো ও বিরল [হাসান গরীব] হাদীস। আলবানীর মতে সহীহ। {তিরমিযী-২২৩৭, ইবন মাজাহ-৪০৭২, অত্র গ্রন্থে ৩৩ নং হাদীস দ্রষ্টব্য।

 

পরিচ্ছেদঃ

১৩। আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলেছেনঃ কোন কৃপণ, ছদ্মবেশধারী ধোঁকাবায, খিয়ানতকারী ও অসচ্চরিত্র ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবে না। সর্বপ্রথম যারা জান্নাতের দরজার কড়া নাড়বে তারা হইবে দাসদাসী যদি তারা আল্লাহর সাথে ও তাদের মনিবের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করে। [ইমাম তিরমিযীর মতে, এটি গরীব অর্থাৎ বিরল হাদীস।]{১}

{১}. তিরমিযী-১৯৪৬, ১৯৬৩ এই গ্রন্থে ৩১ ও ৩২ নং হাদীস দ্রষ্টব্য।

 

পরিচ্ছেদঃ

১৪। আবুত তুফাইল [রাঃআঃ] বলেনঃ যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ ইন্তিকাল করিলেন, তখন ফাতিমা আবু বাকরের নিকট দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী আপনি, না রাসূলের পরিবার? আবু বাকর আস সিদ্দিক যবাব দিলেনঃ রাসূলের পরিবার। ফাতিমার পক্ষ থেকে বলা হলোঃ তাহলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অংশ কোথায়? আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে বলিতে শুনেছি যে, যখন আল্লাহ কোন নাবীকে কোন খাবার খাওয়ান অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান, তখন সেই খাবারকে [সম্পত্তি] তার পরবর্তীদের সম্পত্তিতে পরিণত করেন। তাই আমি স্থির করেছি, তার পরিত্যক্ত সম্পত্তিকে মুসলিমদের সম্পত্তিতে রূপান্তরিত করবো। তখন ফাতিমা [রাঃআঃ] বললেনঃ বেশ, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে যা শুনেছেন, সে সম্পর্কে আপনিই সবচেয়ে ভালো জানেন।{১}

{১}. ইবনে কাছীরের মতে হাদীসের ভাষা বিরল ও দুর্বল। আলবানীর মতে এটি হাসান বা উত্তম। [আবু দাউদ ২৯৭৩] [এই গ্রন্থের ৯ নং হাদীস দ্রষ্টব্য]

 

পরিচ্ছেদঃ

১৫। আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] বলেনঃ একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ ভোরে উঠলেন, ফযরের নামায পড়লেন। তারপর একই জায়গায় বসে রইলেন। দুপুরের আগে তিনি হাসলেন, তারপর আবার যথাস্থানে বসে রইলেন। অতঃপর একে একে জোহর, আছর ও মাগরিব পড়লেন। সব কিছুই নীরবে করিলেন। অতঃপর সর্বশেষ নামায ইশা পড়লেন। তারপর নিয পরিবারের নিকট চলে গেলেন। এরপর লোকেরা আবু বাকরকে বললোঃ আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে জিজ্ঞেস করেন না কেন, তার কী হয়েছে? আয তিনি যা করিলেন, তা তো আর কখনো করেন নি। অতঃপর আবু বাকর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে জিজ্ঞেস করিলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ হ্যাঁ, আমার সামনে দুনিয়া ও আখিরাতের ভবিষ্যতের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। পূর্বের ও পরের সকলকে একই ময়দানে সমবেত করা হলো। লোকেরা আতংকিত হয়ে আদম [আঃ] এর নিকট উপস্থিত হলো। তখন ঘাম তাদেরকে প্রায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত করে ফেলেছে। সবাই বললোঃ হে আদম, আপনি তো মানব জাতির পিতা এবং আল্লাহ আপনাকে বিশেষভাবে মনোনীত করিয়াছেন। আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট আমাদের যন্য সুপারিশ করুন। আদম [আঃ] বললেনঃ তোমরা যে পরিস্থিতির সম্মুখীন, আমিও তদ্ৰপ পরিস্থিতির সম্মুখীন। তোমরা তোমাদের পিতার পরবর্তী পিতা নূহের নিকট যাও। আল্লাহ বলেছেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ আদমকে, নূহকে, ইবরাহীমের বংশধরকে ও ইমরানের বংশধরকে সমগ্ৰ বিশ্ববাসীর ওপরে অগ্ৰাধিকার দিয়েছেন”।

অতঃপর তারা নূহ [আঃ] এর নিকট গেল। তাঁকে বললোঃ আমাদের যন্য আপনার প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করুন। কেননা আল্লাহ আপনাকে বিশেষভাবে মনোনীত করিয়াছেন এবং আপনার দুআ কবুল করিয়াছেন। আপনার দুআর কারণে তিনি পৃথিবীতে কোন কাফির গৃহবাসীকে জ্যান্ত ছাড়েননি। নূহ [আঃ] বললেনঃ আমার দ্বারা ওটা হইবে না। তোমরা বরং ইবরাহীম [আঃ] এর কাছে যাও। কেননা আল্লাহ তাআলা তাকে খলীল তথা বন্ধুরূপে গ্ৰহণ করিয়াছেন। সবাই ইবরাহীম [আঃ] এর নিকট যাবে।

ইবরাহীম [আঃ] বলবেনঃ আমার কিছু করার নেই। তবে তোমরা মূসার নিকট যাও। কেননা আল্লাহ তাআলা তাহার  সাথে বিশেষভাবে কথোপকথন করিয়াছেন। মূসা [আঃ] বলবেনঃ আমার দ্বারা ওটা হইবে না। তোমরা বরং ইসার [আঃ] এর নিকট যাও। তিনি তো অন্ধ ও কুণ্ঠরোগীকে আরোগ্য করিতেন এবং মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করিতেন। ইসা [আঃ] বলবেনঃ ওটা আমার দ্বারা হইবে না। তোমরা বরং আদম সন্তানদের যিনি সরদার, তার কাছে যাও। কিয়ামতের দিন তিনিই সর্ব প্রথম জীবিত হয়ে কবর থেকে বেরিয়ে আসবেন। তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট যাও। তিনি তোমাদের যন্য তোমাদের প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করবেন। অতঃপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আঃ রওয়ানা হইবেন। এই সময়ে জিবরীল [আঃ] তাহার  প্রতিপালকের নিকট আসবেন।

আল্লাহ তাঁকে বলবেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আঃকে অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। জিবরীল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে রওয়ানা হইবেন। অতঃপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আঃ সিযদায় যাবেন এবং প্রায় এক জুমুআর সময় ব্যাপী সিযদায় থাকিবেন। তখন আল্লাহ বলবেনঃ হে মুহাম্মাদ! তোমার মাথা ওঠাও। বল, শ্রবণ করা হইবে। সুপারিশ কর, সুপারিশ গ্ৰহণ করা হইবে। তারপর তিনি মাথা ওঠাবেন। তারপর যখন তাহার  প্রতিপালকের দিকে তাকাবেন, আবার সিযদায় পড়বেন এবং আরেক জুমুআহ পরিমাণ থাকিবেন। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তোমার মাথা ওঠাও, বল শ্রবণ করা হইবে, সুপারিশ কর, গ্ৰহণ করা হইবে। অতঃপর তিনি [পুনরায়] সিযদা করিতে উদ্যত হইবেন। তখন জিবরীল তাঁকে এমন দুআ শিক্ষা দেবেন, যা আর কোন মানুষকে কখনো দেননি।

অতঃপর [মুহাম্মাদ] বলবেনঃ হে আমার প্রতিপালক, আমাকে আদম সন্তানদের সরদাররূপে সৃষ্টি করিয়াছেন। এতে আমার কোন গর্ব নেই। আমাকে সর্ব প্রথম জীবিত করে কবর থেকে উঠিয়েছেন, এতেও কোন গর্ব নেই। এমনকি আমার নিকট হাউয [কাউসার] আনা হইবে- যা বিস্তৃত থাকিবে সানয়া থেকে আইলা পর্যন্ত। তারপর বলা হবেঃ সিদ্দিকগণকে ডাক, তারা সুপারিশ করুক। পুনরায় বলা হবেঃ নাবীগণকে ডাক, তারা সুপারিশ করুক। অতঃপর এক একযন নাবী তাহার  দলসহ আসবেন। এক একযন নাবী আসবেন পাঁচযন ছয়যন করে সাথী নিয়ে। এক একযন নাবী আসবেন কোন সাথী ছাড়াই। পুনরায় বলা হবেঃ শহীদদেরকে ডাক, তারা যার যার যন্য ইচ্ছা সুপারিশ করুক। শহীদগণ যখন আসবেন ও সুপারিশ করবেন, তখন আল্লাহ বলবেনঃ আমি সকল দয়াবানের চেয়ে বড় দয়াবান। যারা আমার সাথে কাউকে শরীক করতো না তাদের সকলকে আমার জান্নাতে প্রবেশ করাও। অতঃপর তারা সবাই জান্নাতে প্ৰবেশ করিবে।

পুনরায় আল্লাহ বলবেনঃ জাহান্নামের ভেতরে খুঁজে দেখ, সেখানে এমন কেউ আছে কিনা যে, কখনো কোন সৎকায করেছে। তখন তারা [ফেরেশতারা] জাহান্নামে এক ব্যক্তিকে পাবে। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি কি কখনো কোন ভালো কায করেছ? সে বলবেঃ না। তবে ক্রয় বিক্রয়ের সময় আমি মানুষের প্রতি উদারতা প্ৰদৰ্শন করতাম। তখন তোমরা [ফেরেশতারা] তেমনি তার প্রতি উদারতা দেখাও। ফেরেশতারা পুনরায় জাহান্নাম থেকে অপর এক ব্যক্তিকে বের করে আনবে। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি কি কখনো ভাল কায করেছ? সে বলবেঃ না। তবে আমি আমার সন্তানদের বলেছি, আমি মারা গেলে তোমরা আমাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিও। অতঃপর আমাকে [আমার পোড়া লাশকে] চুৰ্ণ করো। যখন আমি সুরমার মত হয়ে যাবো, তখন আমাকে সমুদ্রের কাছে নিয়ে বাতাসে উড়িয়ে দিও। তাহলে আল্লাহর কসম! বিশ্ব প্ৰভু আমাকে শাস্তি দিতে পারবেন না।

তখন আল্লাহ বলবেনঃ তুমি এরূপ করেছিলে কেন? সে বলবেঃ আপনার ভয়ে। তখন আল্লাহ বলবেনঃ তাকাও সর্বশ্রেষ্ঠ রাজার রাজ্যের দিকে। তোমার যন্য অনুরূপ রাজ্য ও অদ্ৰপ আরো দশটি রাজ্য নির্ধারিত রহিয়াছে। সে বলবেঃ আপনি বিশ্ব সম্রাট হয়েও আমার সাথে ঠাট্টা করছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলবেনঃ দুপুরের পূর্বে আমি যে হেসেছিলাম, তা এই কারণেই।{১}

{১}. ইবন হিব্বানের মতে, এটি সহীহ হাদীস [৬৪৭৬] ইসহাক থেকে এই মর্মে উক্তি উদ্ধৃত হয়েছে যে, এটি একটি শ্ৰেষ্ঠ হাদীস।

পরিচ্ছেদঃ

১৬। একদিন আবু বাকর [রাঃআঃ] ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করিলেন, অতঃপর বললেনঃ হে যনমণ্ডলী, তোমরা নিশ্চয়ই এ আয়াতটি পড়ে থাকঃيَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لَا يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ “হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের ব্যাপারে সাবধান হও, তোমরা সৎপথে চললে বিপথগামীরা তোমাদের কোন ক্ষতি করিতে পারবে না।” [আয়াতের শেষ পর্যন্ত] তবে তোমরা এ আয়াতের ভুল অর্থ গ্রহণ করে থাক। আমি তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আঃকে বলিতে শুনেছি যে, মানুষ যখন খারাপ কায সংঘটিত হইতে দেখে, অথচ তাকে পাল্টে দেয় না [প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের মাধ্যমে তা বন্ধ করেনা] তখন অচিরেই আল্লাহ তাদের ওপর তার সর্বব্যাপী আযাব নাযিল করেন। আবু বাকর [রাঃআঃ] আরো বললেনঃ সাবধান, মিথ্যা বলোনা। মিথ্যা কথা ইমানের পরিপন্থী। [অত্র গ্রন্থের ১ নং হাদীস দ্রষ্টব্য]।

 

 

পরিচ্ছেদঃ

১৭। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালের পর আবু বাকর [রাঃআঃ] বললেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ গত বছর আমার এই জায়গায় দাঁড়িয়েছিলেন। অতঃপর আবু বকর [রাঃআঃ] কাঁদলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ তোমরা সত্যবাদিতাকে আঁকড়ে ধর। কেননা সত্যবাদিতা সততার সাথী। এই দুটোই জান্নাতে যাওয়ার উপকরণ। সাবধান, মিথ্যা বলোনা। মিথ্যা পাপাচারের সাথী। আর এই দুটোই [মিথ্যা ও পাপাচার] জাহান্নামে যাওয়ার উপকরণ। আল্লাহর কাছে সুস্থতা চাও। কেননা কোন ব্যক্তি ইমানের পরে সুস্থতার চেয়ে ভালো কোন নিয়ামত লাভ করেনি। তারপর বললেনঃ তোমরা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না। একে অপরের পেছনে লেগো না। হিংসা ও বিদ্বেষ পোষণ করো না। আল্লাহর বান্দা ও ভাই ভাই হয়ে যাও। [৫ নং হাদীস দ্রষ্টব্য]।

পরিচ্ছেদঃ

১৮। হুমাইদ বিন আবদুর রহমান হইতে বর্ণীত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ যখন ইন্তিকাল করেন, তখন আবু বাকর [রাঃআঃ] মদীনায় একটি দলের সাথে অবস্থান করছিলেন। তিনি এলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা খুললেন, তাঁকে চুমু খেলেন এবং বললেনঃ আপনার উপর আমার পিতামাতা উৎসর্গ হোক। জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থায় আপনি মহাপবিত্র। কাবার প্রভুর শপথ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আঃ মারা গেছেন। [অতঃপর বর্ণনাকারী পুরো হাদীস উল্লেখ করেন।] অতঃপর বলেনঃ এরপর আবু বাকর [রাঃআঃ] ও ওমর [রাঃআঃ] দূতিয়ালীর ভঙ্গিতে রওনা হয়ে তাদের [যেসব মুহাজির ও আনসার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উত্তরসূরী নিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন তাদের] কাছে উপনীত হলেন।

আবু বাকর [রাঃআঃ] ভাষণ দিলেন। এই ভাষণে তিনি এমন একটি কথাও বলিতে বাদ রাখলেন না, যা আনসারদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছে কিংবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি বললেনঃ আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলেছেনঃ সবাই যদি এক পথে চলে, আর আনসারগণ আরেক পথে চলে, তবে আমি আনসারদের পথে চলবো। হে সাদ, আপনি বসা থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ যে বলেছিলেন, কুরাইশ এই [ইসলামী] রাষ্ট্রের শাসক, তা আপনি অবশ্যই জানেন। সৎ লোকেরা সৎ লোকদের অনুগত হয়। আর অসৎ লোকেরা অসৎ লোকদের অনুগত হয়। সাদ বললেনঃ আপনি সত্যই বলেছেন। আমরা উজীর [মন্ত্রণা দাতা] আর আপনারা শাসক। [অর্থাৎ আনসারগণ মন্ত্রী তথা পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করিবে, আর মুহাজিররা শাসকের ভূমিকা।]

পরিচ্ছেদঃ

১৯। আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃকে জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা যে আমল করি [ভাল হোক কি মন্দ] তা কি পূর্ব-নির্ধারিত [তাকদীদের লিখন] নাকি আমরা নতুনভাবে করি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলিলেন, বরং তা পূর্ব-নির্ধারিত। আবু বাকর [রাঃআঃ] বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! [যদি সবকিছু পূর্ব-নির্ধারিত হয়ে থাকে] তাহলে আমাদের আমলের কী প্রয়োযন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বললেনঃ প্ৰত্যেকের যন্য সে কাযটি সহয করা হয় যার যন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। [সুতরাং তোমরা আমল করিতে থাকো]।

টীকাঃ মূলত: তাকদীর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে, আল্লাহ তাআলা আলীমুল গায়েব। অনাদিতেই তিনি জানেন কি হইবে আর কি হইবে না। সে অনুসারেই লাওহে মাহফুযে তিনি সব লিখে রেখেছেন। সুতরাং আল্লাহ তাআলা লিখে রেখেছেন বলে কেউ ভালো বা মন্দ কায করে না। বরং তার দ্বারা ঐ কাযটি যে সংঘটিত হইবে সে সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত। তাই তিনি লিখে রেখেছেন।

 

যেমন একযন অভিজ্ঞ ডাক্তার তার রুগীর সমস্ত অবস্থা জানেন বলে তার ডায়েরীতে লিখে রাখলেন, এ রুগী অমুক সময় অমুক অবস্থায় মারা যাবে এবং রুগী সেভাবেই মারা গেল। এ ক্ষেত্রে ডাক্তারের লিখন তার মৃত্যুর কারণ নয়। মৃত্যুর কারণ হলো তার রোগ। অনুরূপভাবে আল্লাহ তাআলা সব কিছু জানেন বলেই লিখে রেখেছেন। সুতরাং পরিণামের যন্য ব্যক্তির কর্মই দায়ী, আল্লাহর লিখন নয়।

 

 

পরিচ্ছেদঃ

২০। আয যুহরী বলেনঃ মদীনার আনসারগণের মধ্য থেকে অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা উসমান বিন আফফান [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালে তাহার  কিছু সংখ্যক সাহাবী ভীষণ মর্মাহত হলেন, এমনকি তাদের কেউ কেউ নানা রকম দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হবার উপক্রম হলো। আমিও তাঁদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। এই সময় একদিন আমি যখন বসে আছি, তখন ওমর [রাঃআঃ] আমার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে সালাম দিলেন। কিন্তু তিনি যে আমার কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং আমাকে সালাম করিয়াছেন তা আমি টের পাইনি। ওমর [রাঃআঃ] চলে গেলেন এবং আবু বাকরের [রাঃআঃ] নিকট উপস্থিত হলেন। ওমর [রাঃআঃ] আবু বকর [রাঃআঃ] কে বললেনঃ আমি উসমানের কাছ দিয়ে আসছিলাম এবং তাঁকে সালাম করলাম। কিন্তু তিনি আমার সালামের যবাব দিলেন না। এটা কি আপনার কাছে বিস্ময়কর লাগছে না?

অতঃপর আবু বাকরের শাসনকালে একদা আবু বাকর ও ওমর আমার কাছে এলেন এবং উভয়ে আমাকে সালাম করিলেন। তারপর আবু বাকর [রাঃআঃ] বললেনঃ আমার কাছে আপনার ভাই ওমর এসেছিলেন। তিনি জানালেন যে, তিনি আপনার কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যাওয়ার সময় সালাম করেছিলেন। কিন্তু আপনি যবাব দেননি। এর কারণ কী? আমি বললামঃ আমি এটা করিনি? ওমর [রাঃআঃ] বললেনঃ অবশ্যই, আপনি করিয়াছেন। তবে হে বনী উমাইয়া, এ কাযটি [সালামের যবাব দেয়া] আপনাদেরকে ক্লান্ত ও বিরক্ত করে তুলেছে। আমি বললামঃ আল্লাহর শপথ! আমি টেরই পাইনি যে, আপনি আমার কাছ দিয়ে গিয়েছেন এবং সালাম করিয়াছেন। আবু বাকর [রাঃআঃ] বললেনঃ উসমান সত্য কথা বলেছে।

আচ্ছা, [হে উসমান] কোন বিষয়ের ব্যস্ততা আপনাকে তা থেকে [সালামের যবাব দেয়া থেকে] বিরত রেখেছিল? [অর্থাৎ কোন দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগের কারণে কি আপনি ব্যাপারটা টের পাননি এবং সেদিকে লক্ষ্য করিতে পারেননি?]। আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ জিনিসটি কী? উসমান [রাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তাহার  নাবীকে তুলে নিলেন আমরা তাঁকে এ কথা জিজ্ঞেস করার আগে যে, এই সমাজের মুক্তির উপায় কী? আবু বাকর [রাঃআঃ] বললেনঃ আমি এ প্রশ্ন তাঁকে করেছি। উসমান বলেনঃ এ কথা শ্ৰবণ করা মাত্ৰই আমি তার কাছে উঠে গেলাম, অতঃপর তাঁকে বললামঃ আমার পিতামাতা আপনার ওপর উৎসর্গ হোক। আপনিই এ কথা জিজ্ঞাসা করার অধিকতর যোগ্য। আবু বাকর [রাঃআঃ] বললেনঃ আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে রাসূলুল্লাহ, এই জাতির মুক্তির উপায় কী? তিনি বললেনঃ যে কালেমা আমি আমার চাচার নিকট পেশ করলে তিনি তা প্ৰত্যাখ্যান করেছিলেন সেই কালেমা যে ব্যক্তি গ্ৰহণ করিবে, সেটিই তার মুক্তির পথ।” [২৪ নং হাদীস দ্রষ্টব্য]

২১। ইয়াযীদ বিন আবু সুফিয়ান বলেনঃ আবু বাকর [রাঃআঃ] আমাকে সিরিয়ায় প্রেরণের সময় বললেনঃ হে ইয়াযীদ, তোমার তো কিছু আত্মীয়-স্বযন আছে। তোমাকে নিয়ে আমার সবচেয়ে বড় আশঙ্কা এই যে, তুমি হয়তো তাদেরকে কর্তৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্ৰাধিকার দেবে। অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুসলিমদের কোন বিষয়ে দায়িত্বশীল হইবে, অতঃপর সে স্বযনগ্ৰীতির ভিত্তিতে কাউকে তাদের কর্মকর্তা নিয়োগ করিবে, তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ। আল্লাহ তার কাছ থেকে কোন সুপারিশ বা অব্যাহতির আবেদন গ্ৰহণ করিবে না। তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। আর যে ব্যক্তিকে আল্লাহর সীমানা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হলো এবং সে ঐ সীমানা অন্যায়ভাবে অতিক্রম করলো, তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ। [বৰ্ণনাকারী বলেন] অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলেছেন, তার নিরাপত্তার ব্যাপারে আল্লাহর কোন দায়-দায়িত্ব নেই।{১}

{১}. আল হাকেমের মতে হাদীসটি সহীহ, ৪/৯৩

২২। আবু বাকর আস সিদ্দিক [রাঃআঃ] বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আঃ বলেছেনঃ আমাকে এমন ৭০ হাজার লোক দেয়া হয়েছে যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে। তাদের সকলের মুখমণ্ডল পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মত হইবে এবং তাদের মন এক ব্যক্তির মনের মত হইবে [অর্থাৎ তারা এক মনা ও একমত থাকিবে]। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট আরো বেশি চাইলাম। তখন তিনি আমাকে প্ৰতিযনের সাথে ৭০ হাজার যন করে বাড়িয়ে দিলেন। আবু বাকর [রাঃআঃ] বলেনঃ আমার মনে হয়, এই বক্তব্য গ্রামবাসীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে এবং মরুভূমির আশপাশের লোকযন এ রকম হইবে।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “মুসনাদে আহমদ ১ম খন্ড – ইসলামিক ফাউন্ডেশন”

Your email address will not be published. Required fields are marked *