Description
সহীহ মুসলিম ১ম খন্ড থেকে ৮ম খন্ড
হায়িজ অধ্যায়
১. অধ্যায়ঃ
পরিহিত কাপড়ের ওপরে ঋতুবতী মহিলার সাথে মেলামেশা করা।
৫৬৬
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতুবতী হয়ে পড়ত তখন রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর নির্দেশে সে পরিহিত কাপড় ভাল করে বেঁধে নিত। অতঃপর রসূলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] তার সাথে মেলামেশা করিতেন। [ইসলামিক ফা:- ৫৭০, ইসলামিক সে.- ৫৮৬]
৫৬৭
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতুবতী হয়ে পড়ত তখন রসূলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] তার হায়িয আসার স্থানে তাকে শক্ত করে কাপড় বেঁধে নেয়ার নির্দেশ দিতেন। অতঃপর তার সাথে মেলামেশা করিতেন। তিনি {আয়েশা [রাঃআঃ]} বলেন, তোমাদের মধ্যে কে তার যৌনকামনা সেরূপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম-রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] যেরূপ যৌন কামনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম ছিলেন? [ইসলামিক ফা:- ৫৭১, ই.সে ৫৮৭]
৫৬৮
মাইমুনাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] তাহার সহধর্মিণীদের সাথে পরিহিত কাপড়ের উপর ঋতুর অবস্থায় মেলামেশা করিতেন। [ইসলামিক ফা:- ৫৭২, ইসলামিক সে.- ৫৮৮]
২. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী মহিলার সাথে একই চাদরের নীচে শোয়া
৫৬৯
আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস [রাঃআঃ] এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব হইতে বর্ণীত আছেঃ
আমি নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর স্ত্রী মাইমূনাকে বলিতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ আমি ঋতুবতী অবস্থায় রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] আমার সঙ্গে একই বিছানায় শুইতেন। এ সময় আমার ও তাহার মাঝে কেবলমাত্র একখানা কাপড়ের আড়াল থাকত। [ই.ফা ৫৭৩, ইসলামিক সে.- ৫৮৯]
৫৭০
উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, একদা আমি ও রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] একটি রেখাযুক্ত চাদরের নীচে শুয়েছিলাম। ইতোমধ্যেই আমার হায়িয এলো। আমি চুপিসারে উঠে গিয়ে আমার হায়িয-এর কাপড় পরে নিলাম। রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] আমাকে বলিলেন, তোমার কি হায়িয এসেছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি আমাকে [কাছে] ডাকলেন। অতঃপর আমি তাহার চাদরটির নীচে শুইলাম।
রাবী বলেন, তিনি [উম্মু সালামাহ] ও রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] একই পাত্র থেকে [পানি নিয়ে] নাপাকির পবিত্র হওয়ার গোসল করিতেন। [ইসলামিক ফা:- ৫৭৪, ইসলামিক সে.- ৫৯০]
৩. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী মহিলাদের যন্যে তার স্বামীর মাথা ধুয়ে দেয়া, তার চুল আঁচড়িয়ে দেয়া জায়িয; তার উচ্ছিষ্ট পবিত্র; তার কোলে মাথা রেখে হেলান দেয়া ও সেখানে কুরআন পাঠ করা জায়িয
৫৭১
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
রসূলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] যখন ইতিকাফ করিতেন তখন আমার দিকে তাহার মাথা ঝুঁকিয়ে দিতেন। আমি তা আঁচড়ে দিতাম। [ইতিকাফ কালে] তিনি ঘরে প্রবেশ করিতেন না প্রাকৃতিক প্রয়োযন [যেমন প্রস্রাব পায়খানা] ছাড়া। [ইসলামিক ফা:- ৫৭৫, ইসলামিক সে.- ৫৯১]
৫৭২
নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর স্ত্রী আয়েশাহ[রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, [ইতিকাফের সময়] আমি যখন প্রাকৃতিক প্রয়োযনে ঘরে প্রবেশ করতাম। ঘরে কোন রোগী থাকে তাহলেও তাকে কোন কথা জিজ্ঞেস না করেই চলে যেতাম। ইতিকাফের সময় রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] মাসজিদ থেকে আমার দিকে মাথা এগিয়ে দিতেন, আর আমি তাহার চুল আঁচড়ে দিতাম। ইতিকাফ থাকাবস্থায় তিনি [প্রাকৃতিক] কোন প্রয়োযন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করিতেন না।
ইবন রুমহ্ বলেছেন: যখন তাঁরা ইতিকাফের অবস্থায় থাকতেন, প্রাকৃতিক প্রয়োযন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করিতেন না। [ইসলামিক ফা:- ৫৭৬, ইসলামিক সে.- ৫৯২]
৫৭৩
নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর সহধর্মিণী আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] ইতিকাফে থাকাবস্থায় [অধিকাংশ সময়] মাসজিদ থেকে তাহার মাথা আমার দিকে বের করে দিতেন। আমি ঋতুবতী অবস্থায় তা ধুয়ে দিতাম। [ইসলামিক ফা:- ৫৭৭, ইসলামিক সে.- ৫৯৩]
৫৭৪
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] আমার দিকে তাহার মাথা এগিয়ে দিতেন। আমার হুযরায় থেকে ঋতুবতী অবস্থায় আমি তাহার মাথা আঁচড়ে দিতাম। [ইসলামিক ফা:- ৫৭৮, ইসলামিক সে.- ৫৯৪]
৫৭৫
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর মাথা ধুয়ে দিতাম। [ইসলামিক ফা:- ৫৭৯, ইসলামিক সে.- ৫৯৫]
৫৭৬
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] আমাকে বলিলেন, “মাসজিদ থেকে আমার জায়নামাযটি [হাত বাড়িয়ে] নিয়ে এসো”। তিনি বলেন, আমি বললাম, আমি তো ঋতুবতী। তিনি বললেনঃ তোমার হায়িয তো তোমার হাতে নয়। [ইসলামিক ফা:- ৫৮০, ইসলামিক সে.- ৫৯৬]
৫৭৭
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] মাসজিদ থেকে জায়নামায [হাত বাড়িয়ে] তুলে নিয়ে আসতে আমাকে নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম যে, আমি তো ঋতুবতী। তিনি বলিলেন, তুমি তো আমার কাছে নিয়ে এসো। কারণ হায়িয তোমার হাতে নেই [লেগে যায়নি]। ইসলামিক ফা:- ৫৮১, ইসলামিক সে.- ৫৯৭]
৫৭৮
আবু হোরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, একদিন রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] ইতিকাফরত অবস্থায় মাসজিদ থেকে বলিলেন, হে আয়েশাহ! আমাকে কাপড়টা এগিয়ে দাও। তিনি [আয়েশাহ [রাঃআঃ]} বলেন, আমি যে ঋতুবতী! যবাবে রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বলিলেন, ঋতু তো তোমার হাতে লাগে নাই। তারপর আমি তা এনে দিলাম। [ইসলামিক ফা:- ৫৮২, ইসলামিক সে.- ৫৯৮]
৫৭৯
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় পানি পান করতাম এবং পরে নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে অবশিষ্টটুকু প্রদান করলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়ে পান করতাম তিনিও পাত্রের সে স্থানে মুখ লাগিয়ে পান করিতেন। আবার আমি ঋতুবতী অবস্থায় হাড় খেয়ে তা নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে দিলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়েছিলাম তিনি সেখানে মুখ লাগিয়ে খেতেন। তবে যুহায়র কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে “পান করার” উল্লেখ নেই। [ইসলামিক ফা:- ৫৮৩, ইসলামিক সে.-৫৯৯]
৫৮০
আয়েশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, [অধিকাংশ সময়] রসূলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] আমার হায়িয অবস্থায় আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন পাঠ করিতেন। [ইসলামিক ফা:- ৫৮৪, ইসলামিক সে.- ৬০০]
৫৮১
আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
ইয়াহূদীগণ তাদের মহিলাদের হায়িয হলে তার সাথে এক সঙ্গে খাবার খেত না এবং এক ঘরে বাস করত না। সাহাবায়ে কিরাম এ সম্পর্কে রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে জিজ্ঞেস করিলেন। তখন আল্লাহ্ তাআলা এ আয়াত নাযিল করিলেন, “তারা তোমার কাছে হায়িয সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও যে, তা হলো নাপাক। সুতরাং হায়িয অবস্থায় তোমরা মহিলাদের থেকে পৃথক থাক….”[সুরা আল বাকারাহ্ ২ : ২২২]। এরপর রসুলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] বললেনঃ তোমরা [সে সময় তাদের সাথে] শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কায কর। এ খবর ইয়াহূদীদের কাছে পৌছলে তারা বলিল, এ লোকটি সব কাজেই কেবল আমাদের বিরোধিতা করিতে চায়। অতঃপর উসায়দ ইবন হুযায়র [রাঃআঃ] ও আব্বাস ইবন বিশর [রাঃআঃ] এসে বলিলেন, ইয়া রসূলু ল্লাহ! ইয়াহূদীরা এমন এমন বলছে। আমরা কি তাদের সাথে [হায়িয অবস্থায়] সহবাস করব না? রসুলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর চেহারা মুবারক বিবর্ণ হয়ে গেল। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি তাদের উপর ভীষণ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা [উভয়ে] বেরিয়ে গেল। ইতোমধ্যেই রসূলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর কাছে দুধ হাদিয়া এলো। তিনি তাদেরকে ডেকে আনার যন্যে লোক পাঠালেন। [তারা এলে] তিনি তাদেরকে দুধ পান করালেন। তখন তারা বুঝল যে, তিনি তাদের উপর রাগ করেননি। [ইসলামিক ফা:- ৫৮৫, ইসলামিক সে.- ৬০১]
৪. অধ্যায়ঃ
মাযীর বিবরণ
৫৮২
আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলিলেন, আমার বেশি বেশি মাযী বের হত। আমি এ সম্পর্কে নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর কাছে জিজ্ঞেস করিতে লজ্জাবোধ করতাম। কারণ তাহার কন্যা ছিল আমার স্ত্রী। তাই আমি মিকদাদ ইবনল আসওয়াদকে [এ সম্পর্কে জানতে] বললাম, তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] কে জিজ্ঞেস করিলেন। তখন তিনি বলিলেন, এ তার পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে এবং ওযূ করে নিবে। [ইসলামিক ফা:- ৫৮৬, ইসলামিক সে.- ৬০২]
৫৮৩
আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর কাছে মাযী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে লজ্জাবোধ করছিলাম ফাতিমার কারণে। তাই আমি মিকদাদকে বললাম, তখন তিনি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ তাতে [মাযী বের হলে] শুধু ওযূ করিতে হয়। [ইসলামিক ফা:- ৫৮৭, ইসলামিক সে.- ৬০৩]
৫৮৪
ইবন আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত আছেঃ
তিনি বলেন, আলী আবু তালিব [রাঃআঃ] বলেন, আমি একবার মিকদাদ ইবনল আসওয়াদকে রসুলূল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আঃ] এর কাছে পাঠালাম। তিনি রসূলু ল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আঃ]-এর কাছে জিজ্ঞেস করিলেন যে, কোন লোকের মাযী বের হলে সে তখন কি করিবে? তিনি বললেনঃপুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে এবং ওযূ করিবে। [ইসলামিক ফা:- ৫৮৮, ইসলামিক সে.- ৬০৪]
Reviews
There are no reviews yet.